সরকারি সকল নিয়ম নীতিকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১১ শিক্ষক চালাচ্ছেন রমরমা কোচিং বাণিজ্য । এসব শিক্ষকরা স্কুলের সমানেই যেন আরেকটি মিনি স্কুল খুলে বসেছে। সরকারি ভাবে কোচিং নিষিদ্ধ করা হলেও কোন নিয়ম নীতিকে তোয়াক্কা না করছেন না তারা। সবার অগোচরে নিরবেই চলছে তাদের রমরমা কোচিং বাণিজ্য।
খোজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকসহ ১১ জন দীর্ঘ দিন ধরে এসব কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ফরক্কাবাদ বাজারে একাধিক ভবন ভাড়া নিয়ে আবার কেউ বা বাজারের পিছনে বাসা ভাড়া নিয়ে এসব কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। আর এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যেন অভিযোগের কোন কমতি নেই।অভিযোগ রয়েছে এসব শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে আসতে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করে।আবার যেসব শিক্ষার্থী তাদের কাছে না পড়ে তাদের পরিক্ষার খাতায় নাম্বার কমিয়ে দেয়।অপরদিকে যারা তাদের কাছে কোচিং করে সেসব শিক্ষার্থীদের আগে থেকেই পরিক্ষার প্রশ্ন দিয়ে দেয়।
ওই এলাকার একজন দিনমজুর অভিযোগ করে বলেন, ভাই আমার ৩ সন্তান স্কুলে পড়ে। কোচিং না পড়লে শিক্ষকরা মারধর করে। আমি নিজের সংসার চালাতে হিমশিম খাই।ওদের ৩ জনের কোচিংয়ের টাকা কোথা থেকে দিবো বলেন।
আরো জানা যায়,ভোর ৭ টা থেকে এসব অসাধু শিক্ষকদের চলে কোচিং বাণিজ্য। সচেতন মহলের প্রশ্ন একজন শিক্ষার্থী যখন সকাল ৭ টায় কোচিংয়ে আসে তার মানে সে বাসা থেকে আরো আগে রওনা হতে হয়।তাহলে সে শিক্ষার্থী বিকেলে ৩ টার সময় যে ক্লাস হয় সেই ক্লাসের জন্য সে কতটা প্রস্তুত থাকে বা তার মানসিক অবস্থাই বা কি রকম থাকে।আবার যে শিক্ষক সকাল ৭ টায় কোচিং করাতে চলে আসেন তিনিই বা বিকেল ৩ টায় যে ক্লাস নেন সে ক্লাসে কতটা পাঠদান করাতে সক্ষম হন।এসব প্রশ্ন কি শিক্ষক সমাজের যারা দায়িত্বে আছেন তাদের মনে জাগে না? নাকি তারা যেনেও না জানার ভান করছেন!
অভিযোগ রয়েছে এসব অসাধু নামধারী শিক্ষকরা পাঠধানের চেয়ে একে অপরের চেয়ে মাসে কত টাকা বেশি কামাতে পারবে সেই প্রতিযোগীতায় বেশি ব্যস্ত থাকে।
এবিষয়ে সহকারী শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন বলেন,আমরা কোচিং করাই এটি সত্য। আমরা কত টাকাই বা বেতন পাই। সেজন্য আমরা কোচিং পড়িয়ে থাকি।
বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক হান্নান মিয়াজী বলেন, আমি একাধিক বার তাদেরকে মিটিংয়ে সতর্ক করেছি।তারপরও যদি কেও কোচিং করায় তার দায় দায়িত্ব সে নিবে।কোচিংতো সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ।
প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ২৬ নভেম্বর ২০২২