চাঁদপুরে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক থেকে তৈরী হচ্ছে সুতা

বাসা-বাড়ি,ব্যবসায় ও কর্মস্থলে ব্যবহার শেষে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক সামগ্রী দিয়ে তৈরী হচ্ছে সুতা। এই প্লাস্টিকের সুতা চাঁদপুরসহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। প্রকৃতির কোন ক্ষতি না করে প্লাস্টিক পন্যটি পক্রিয়াজাত করে ব্যবহার উপযোগী করা হয়।

এই শিল্পটিকে আরোও এগিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন প্লাস্টিক ইন্ড্রাস্ট্রির পরিচালক উত্তম কুমার।

সরেজমিন ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মানুষের ফেলে দেয়া বোতলসহ প্লাস্টিকের বর্জ্য পরিশোধিত করা হচ্ছে চাঁদপুরের পুরানবাজারে। এটি শহরের পুরানবাজার এলাকার ১০ নং ঘাটের হাজী শরিয়তুল্লা সড়কে পরিবেশবান্ধব এই কাজটি করছেন জুঁই প্লাস্টিক ইন্ড্রাস্ট্রি।

প্লাস্টিক থেকে তৈরি সুতা পাইকারী প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা ও খুচরা ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রয় করা হয়।

আনুমানিক ৫৩ শতাংশ জায়গা ব্যবহার করা হচ্ছে কারখানার বর্জ্য সংশোধনীতে। যেখানে পেড (পেপসি, সেভেনআপ, টাইগার, স্পীড, সয়াবিন তেলের বোতল ৫ সুঁতা কাটিং), মুলাম (প্লাস্টিকের চেয়ার, বালতি, বদনার মতো বিভিন্ন আইটেমের ৮ সুঁতা কাটিং কুচা) তৈরি হয়। এ ছাড়াও আরএফএল বা পিপি রয়েছে। যা থেকে কেকরা সুঁতা তৈরি হয়।

জানা যায়, জেলার ৭/৮ টি কাটিং সাইটের মধ্যে এটি অন্যতম। তাই এখানকার তৈরি পেড যায় চট্টগ্রামে, আর মুলাম যায় ঢাকায়। তবে সুঁতাগুলো এখান থেকেই বিভিন্ন মোকামে যায়। কেননা জেলায় কেকরা সুঁতা একমাত্র এখান থেকেই তৈরি হয়। বর্তমান সময়ে অপেক্ষাকৃত সস্তা এবং বহনযোগ্য হওয়ায় দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে প্লাস্টিক সামগ্রী। তাই এর ব্যবহার নিয়ে আপত্তি নেই। কিন্তু ব্যবহারের পর যেভাবে এগুলোকে যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হচ্ছে, আপত্তি তাতেই৷

বিশেষ করে প্লাস্টিকের বোতল, গৃহস্থালির প্লাস্টিক কিংবা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত প্লাস্টিক অধিকাংশই পুনর্ব্যবহার বা পুনঃচক্রায়ন না করে প্রাকৃতিক পরিবেশে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। যেহেতু প্লাস্টিকের সামগ্রী মাটিতে মিশতে পারেনা। তাই এর একাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয় এবং ক্রমশ তা বর্জ্য হিসেবে জমা হচ্ছে লোকালয়ের বুকে৷ আর তা থেকেই ছড়াচ্ছে পরিবেশ দূষণ এবং এটিই পরিবেশের জন্য অশনি সংকেত।

শ্রমিক আল-আমিন চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, কারখানায় প্রতিদিন গড়ে ২শ কেজির মতো প্লাস্টেকর সুতা তৈরি করা হয়। যা করতে ২৫ জন পুরুষ এবং ১৫ জন মহিলা সহ ৪০ জন কর্মচারী এই কাজগুলো করে থাকেন। মালের চাপ কমবেশি অনুযায়ী কর্মচারীর সংখ্যাও কমবেশি হয়।

কারখানার পরিচালক উত্তম কুমার চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ২০১২ সালের ৮ফেব্রুয়ারি ছোট্ট পরিসরে এই কারখানাটি শুরু করা হয়। টোকাই, হকার ও ভাঙ্গারীসহ মোট ৩ শ্রেণীর প্রায় ১২ হাজার শ্রমিক এই কাজের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। এই ব্যবসায়কে টিকিয়ে রাখতে অনেক টাকার প্রয়োজন। প্লাস্টিকের সুতা বর্তমানে চাঁদপুর জেলায় সীমাবদ্ধ রয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগীতা পেলে প্লাস্টিকের সুতাটি সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া যাবে।

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট

Share