প্লাটিলেট হলো রক্তের কোষ, যা রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতি ১০০ মিলিমিটার রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা দেড় থেকে চার লাখ থাকা উচিত। প্লাটিলেটের ওপর নির্ভর করে মানুষের সুস্থ থাকা। আর তাই শরীরে প্লাটিলেটের অভাব হলে সহজে ক্লান্ত হয়ে যেতে পারেন। খুব সহজে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। নিয়মিত ভিটামিন বি১২ খেলে শরীরে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়ে। যেকোনো আমিষ খাবারেই এই ভিটামিন বি১২ প্রচুর পরিমাণে থাকে।
ডেঙ্গুর কারণে এই প্লাটিলেটের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে। জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে এই প্লাটিলেটের মাত্রা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়। রক্তে কমে যাওয়া প্লাটিলেটের পরিমাণ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কিছু খাবারের বিশেষ ভূমিকা আছে।
পেঁপে ও পেঁপের পাতা
মালয়েশিয়াভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজিতে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপে পাতার রস ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তে কমে যাওয়া প্লাটিলেটের পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পাকা পেঁপের জুসও প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে পারে। এ জন্য কারও রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে গেলে তাঁকে প্রতিদিন তাজা পেঁপে পাতা বেটে রস বের করে ১ চামচ করে দুই বেলা খাওয়ানোর পাশাপাশি পাকা পেঁপের জুসও খেতে দিতে পারেন।
মিষ্টিকুমড়া ও কুমড়ার বীজ
মিষ্টিকুমড়ায় রয়েছে রক্তে প্লাটিলেট তৈরির উপাদান ভিটামিন ‘এ’। রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে তাই নিয়মিত মিষ্টিকুমড়া খেতে পারেন। মিষ্টিকুমড়ার বীজেও রয়েছে প্লাটিলেট বৃদ্ধিকারী উপাদান। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার কারণে রক্তে প্লাটিলেট কমে গেলে তাঁকে নিয়মিত মিষ্টিকুমড়া ও মিষ্টিকুমড়ার বীজ খেতে দিন।
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর রস
অ্যালোভেরার রয়েছে রক্তকে বিশুদ্ধ করার ক্ষমতা। রক্তে যেকোনো জীবাণুর সংক্রমণ রোধ করতেও অ্যালোভেরা কার্যকরী। তাই রক্তের প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়াতে ডেঙ্গু রোগীকে নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস পান করাতে পারেন।
ডালিম
অনেকের কাছে ডালিম ফলটি খুবই প্রিয়। ডালিমের রস রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, কারণ এতে রয়েছে প্রচুর আয়রন। এ ছাড়া ডালিমের রসে থাকা ভিটামিন শরীরের দুর্বলতা দূরীকরণেও কাজ করে। তাই রোগীকে প্রতিদিন ১৫০ মিলিলিটার ডালিমের জুস খেতে দিন। এই অভ্যাস দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চালু রাখুন।
খেয়াল রাখা জরুরি
ডেঙ্গু রোগীর হজমশক্তি অনেকাংশে কমে যায় বলে বমি ও পেটব্যথা হতে পারে। রোগীর যকৃতে অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হয়ে রক্তে এসজিপিটির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাই রোগীকে বাড়তি মসলা ও তেলচর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়ানো ভালো। তবে তার খাবারে পর্যাপ্ত আমিষ উপাদান থাকা জরুরি। এ জন্য তাকে মাছ, মুরগি, দুধ, ডিম প্রভৃতি উপকরণে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে দিতে হবে।
টাইমস ডেস্ক/১১ আগস্ট ২০২৩