চাঁদপুর সদর

‘প্লাটফর্মে ঘুমাই আমাগো রে সরকার যদি একটা বাড়ি দিত, সুখে এটু ঘুমাইতাম’

‘প্লাটফর্মে ঘুমাই আমাগো রে সরকার যদি একটা বাড়ি দিত, সুখে এটু ঘুমাইতে পারতাম। রাতে ঘুমাইতে গেলে কত কষ্ট হয়। মশা কামরায়। বৃষ্টি আসে। শীতে কুয়াশায় কত ঠান্ডা লাগে। আমার মার ছোট বোনডার কত কষ্ট হয়।’

এভাবেই নিজের মনের ভেতর জমে থাকা দুঃখের কথাগুলো বলছেন ১২ বছরের ফারজানা। মানুষের কাছে থেকে ভিক্ষা করে টাকা তুলে সংসার চালান। তারা তিন বোন দুই ভাই।

ফারজানার পরিবার চাঁদপুর সদর উপজেলার, ৪নং শাহ মাহমুদপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে অবস্থিত শাহতলী রেলওয়ে স্টেশনের প্লাটফর্মে। গত এক বছর ধরে বসবাস করছে।

ফারজানার মা মুন্নী বেগম (৪৫) বলেন, আমি গত ২০ বছর ধরে চাঁদপুরের বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে থাকি। পোলাপান নিয়ে কত কষ্ট হয়। কাউ রে কইতে পারি না। ওর বাবা কোথায় চলে যায় কোন খোঁজ খবর নেয় নাহ। আমার মেয়েরা ভিক্ষা করে অনে আমি সহ খাই। কোন মতে বেঁচে আছি।

কেউ বলে মানবতার মৃত্যু হয়েছে বহু আগে। কেউ বলে মানবতা বন্দী হয়ে আছে অন্ধকার কুঠুরিতে। আবার কেউ কেউ মানবতার সন্ধান করে জাদুঘরে। মানবতা কি আদোও বেঁচে আছে?।

ফারজানার পরিবারের মত গৃহহীন কত অসহায় মানুষ বসবাস করে রেলওয়ে স্টেশনে। যার নেই কোন হিসেবে। আর তাদের খোঁজ নেওয়া মত কেউ নেই। তাদের নেই কোন বলার মত ঠিকানা। তারপরে ও বেঁচে থাকে শুধু সংগ্রাম করে।

ফারজানা জন্মের পর কখনো কোন ঘরে ঘুমাতে পারেনি। তবে এখনো ফারজানা স্বপ্ন দেখে। হয় তো কোন একদিন সরকার। ফারজানাদের দিকে নজর দিবে। এবং ছোট একটি ঘর দিবে। সেদিন ফারাজানার পরিচয় দেওয়া মত এটি ঠিকানা হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ বলেন ‘আমরা চেষ্টা করছি। চাঁদপুরে যাতে কোন গৃহীত পারিবার না থাকে। তবে আমাদের খাস জমির কিছুটা সংকট রয়েছি। তবে আমরা চেষ্টা করবো ফারজানা পাশে দাড়াতে।’

শাহতলী ইস্টিশেন দোকানদার এলাহি বলেন‘মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গৃহহীনদের ঘরে দেওয়া যে কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। সেখান থেকে একটা ঘর যাতে ফারজানাকে উপহার দেওয়া হয়।’

স্টাফ করেসপন্ডেট,৭ মার্চ ২০২১

Share