প্রেম করার পরামর্শ দিয়ে যা বললেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক

কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রীদের প্রেম করার পরামর্শ দিলেন কুমিল্লার বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বুধবার(৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক মো: হাসানুজ্জামান কল্লোলের কুমিল্লা থেকে বিদায় উপলক্ষে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তাকে গণপূর্তমন্ত্রণালয়ে বদলী করা হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই তিনি সেখানে চলে যাবেন ।

তিনি কুমিল্লায় দায়িত্ব পালনকালে কুমিল্লায় একাধিক ঐতিহাসিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হলো উপমহাদেশের অন্যতম সঙ্গীতজ্ঞ শচীনদেব বর্মনের স্মৃতিবিজরিত বাসভবন। প্রায় অর্ধশত বর্ষ পরিত্যক্ত থাকার পর যেখানে মুরগীর খামার গড়ে উঠেছিল। সেই ভূমি উদ্ধার করে সেখানে একটি আধুনিক কমপ্লেক্স নির্মাণাধীণ।

ইতিহাসে নবাব ফয়জুন্নেছার ঐতিহ্য তুলে ধরা, কুমিল্লা কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পূরধা বীরমুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামের খ্যাতি তুলে ধরা, কুমিল্লায় জাতিয় কবি কাজি নজরুল ইসলামের জাতিয়ভাবে প্রথম জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠান উদ্যাপন, আইনশৃঙ্খলা উন্নতিতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় দেশে ১৭ বার কুমিল্লা প্রথম স্থান অর্জন, কুমিল্লা কালেক্টরেট মসজিদ আধুনিকায়নসহ সরকারের এসব উন্নয়নে জেলা প্রশাসক হিসেবে তিনি সাহসী ভূমিকা রেখেছেন।

এসব উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত থেকে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসানুজ্জামান কল্লোল কুমিল্লার রাজনীতিক এবং বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের কাছে মিশে গিয়েছেন।

প্রতি সপ্তাহে একদিন করে নিয়ে ছিলেন গণশুনানী। এতে করে একজন সাধারণ মানুষও তাঁর সংস্পর্শ লাভ করেছিল। কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ কর্তৃক জেলা প্রশাসক মো: হাসানুজ্জামান কল্লোলকে বিদায়ী সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যকালে এসব কথা উঠে আসে।

সম্প্রতি আলোচিত সস্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নির্মূলে তাঁর ভূমিকা নিয়ে বক্তব্যকালে জেলা প্রশাসক মো: হাসানুজ্জামান কল্লোল জানান, ‘আহছান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষে তাঁর একমাত্র পুত্র পড়াশুনা করছে। তাঁর পুত্রকে তিনি প্রেম করার অনুমতি দিয়েছেন।’

কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘তোমরাও প্রেম করবে। তবে, প্রেম করতে হলে তোমাদের বয়স হতে হবে ১৮ বছর এবং অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে নেবে। তবে, পড়ালেখায় যাতে বিঘ্নতা সৃষ্টি না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে ৮ হাজার ছাত্রী রয়েছে। তোমরা একে অপরের সাথে প্রেমের মাধ্যমে ১৬ হাজার লোক সন্ত্রাস-জঙ্গীবাদ থেকে নিরাপদ হয়ে যেতে পারো। তিনি গর্ববোধ করে বলেন, তাঁর পিতা-মাতা, শশুর-শ্বাশুরী ছিলেন শিক্ষক। তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক পরিবারের সন্তান। যে আদর্শ তিনি এখনো লালন করেন।

কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজে ১০ তলা ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১০ তলা ভবন নির্মাণ বাংলাদেশে এটিই প্রথম। তাই কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের এ উন্নয়নে তিনি গর্বিত। এই কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতে ভবিশ্যতে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপি, সচিব, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধান, ডিসি, এসপি বা অধ্যক্ষ এ.এস.এম আবদুল ওহাবের মতো একজন গুণীশিক্ষক হতে পারেন। তিনি সেই কামনাই করছেন।

কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ. এস. এম আবদুল ওহাবের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র আল কুরআন, গীতা ও ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। পরে জাতীয় সঙ্গীত শেষে অতিথিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে শিক্ষক রিতা চক্রবর্তীর পরিচালনায় অধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল ওহাব বলেন, কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের চলমান উন্নয়নে কুমিল্লা-৬ (সদর) সংসদীয় আসনের এমপি হাজি আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার কাছে তিনি কৃতজ্ঞ। উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতায় সার্বিক পরিবেশের পাশাপাশি পরীক্ষার ফলাফলেও অনেক উন্নতি ঘটেছে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত থাকলে সারাদেশে একটি মডেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিচিতি লাভ করবে কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজ।

ছাড়াও বক্তব্য রাখেন উপাধ্যক্ষ প্রফেসর সৈয়দা বিলকিস আরা বেগম, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন, অনুষ্ঠান উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কাজী ফারুক আহমেদ। অনুষ্ঠানে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নিউজ ডেস্ক ।।আপডটে, বাংলাদশে সময় ০৬:২৫ পিএম,০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সোমবার
এইউ

Share