প্রেম ও সেক্স বিষয়ে পুতুলের বিকৃত ব্যবহার

পুতুলের প্রেম ভালবাসা ও সেক্সের পাগল ওরা। এ পুতুল হচ্ছে সিলিকনের পুতুল। এর নেই কোন মান-অভিমান, নেই চাহিদা, নেই পারিবারিক অশান্তি, শুধু কাছে থেকে সঙ্গই দিয়ে যায়। রূপেও কোনো অংশে কম নয়।

এসব বিকৃত মানসিকতার ‘যুক্তিকে’ সামনে রেখে মানুষের বদলে জীবনসঙ্গী হিসেবে পুতুলের দিকে ঝুঁকছে চিন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন উন্নত দেশের পুরুষরা।

হুবহু মানুষের মতো দেখতে সিলিকনের তৈরি এসব পুতুল কিনতে ব্যয় করছেন কাড়ি কাড়ি টাকা। চাহিদা না থাকলেও পুতুলের জন্য কিনে আনছেন নতুন নতুন পোশাক, গহনাও। জবাব না পেলেও অনর্গল কথা বলে যাচ্ছেন পুতুলের সঙ্গে। একসঙ্গে ঘুমাচ্ছেন। লংড্রাইভে বের হচ্ছেন। আরও কত কী…

পুতুলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির হার সবচেয়ে বেশি বাড়ছে চিনে। বিশেষ করে চিনের পুরুষদের মধ্যে ক্রমেই বাড়ছে মানুষ আকৃতির ও সিলিকনের তৈরি পুতুলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর ঘটনা। শুধু যে সুন্দরী এসব পুতুলকে যৌন সঙ্গী হিসেবে পুরুষরা পছন্দ করছেন, তা কিন্তু নয়। বরং সন্তান হিসেবে গ্রহণ করছেন অনেকে। গার্লফেন্ড হিসেবে, স্ত্রী হিসেবেও সিলিকন পুতুলের সঙ্গে সম্পর্কে তৈরি করার ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে দেশটিতে।

বিপরীত লিঙ্গের মানুষকে বিয়ে না করে পুতুলের সঙ্গে সংসারে আগ্রহী হবার পেছনে চিনের কম জনসংখ্যা নীতিও একটা অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করছেন অনেকে। এছাড়া অনেকে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে বিয়ে করতে পারছেন না। তারা পুতুলকে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করছেন।

এক্ষেত্রে যারা এটা করছেন তারা বলছেন, পুতুলকে বিয়ে করলে সন্তান জন্মের বিষয়টি নেই। এতে দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আসবে।

এছাড়া একজন মানুষকে বিয়ে করলে তার প্রতি অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয়। পুতুলের ক্ষেত্রে সেটা প্রয়োজন পড়ে না। ঝগড়া-ঝাটির বিষয় থাকে না। ইচ্ছাখুশি মতো সুন্দরী পুতুলও কেনা যায়। শুধু বংশধর জন্ম নেয় না। তবে এখন তো গর্ভও ভাড়া পাওয়া যায়।

চিনের অন্যতম শীর্ষ সংবাদমাধ্যমে পিপলস ডেইলি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, অনেকে বাসে, সিনেমা হলে, পার্কে হাটার সময় সঙ্গী হিসেবে রাখছেন তার পুতুলটিকে।

যেমন সাং বো নামক এক ব্যক্তি তার পুতুলটিকে মেয়ের মতো লালন পালন করছেন। ২৯ বছর বয়সী এই ব্যক্তি একটি জটিল রোগে ভুগছেন, তাই তিনি বিয়ে বা সন্তান নেওয়ার ঝুঁকি নিতে চান না। এর পরিবর্তে পুতুলকে মেয়ে হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং পুতুলটির জন্য নিয়মিত শপিং করে থাকেন।

বেইজিংয়ের ৩৬ বছর বয়সী শেয়ার ব্যবসায়ী জ্যাং ফ্যান বলেন, তার পুতুলটি একটি নারী সংস্করণ। এবং এটির ব্যক্তিত্ব রয়েছে। তার কাছে সে একজন নারী। তিনি তার জন্য পোশাক ও গহনা নিয়মিত কিনে থাকেন। রাস্তায় ও পার্কে তারা একসঙ্গে ছবি তোলেন।

গার্লফ্রেন্ড হিসেবে পুতুলের সঙ্গে মেলামেশার বিষয়টি জ্যাংয়ের পরিবার মেনে নিয়েছে। তিনি এখন পুতুলটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করতে চাইছেন।

সব মিলিয়ে সিলিকন পুতুলের বড় বাজার সৃষ্টি হয়েছে চিনে। দেশটির বাজারে বর্তমানে ৫০ ধরনেরও বেশি সিলিকন পুতুল পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে মানুষের মতো খুবই নরম ও কোমল ত্বকের পুতুলও রয়েছে।

যৌন সম্পর্ক ছাড়াও অনেকে পুতুলকে জীবনসঙ্গী হিসেবেও গ্রহণ করতে আগ্রহী।

ডেস্ক রিপোর্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮:০০ এএম, ১৬ জুলাই ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ

Share