বিশেষ সংবাদ

ফিরে পেলো ৬০ বছরের পুরানো ‘প্রেমের পক্ষীরাজ’!

প্রথম দর্শনেই একে অন্যের প্রেমে পড়েছিলেন তারা। তারপর দু’জনেই মোটরবাইকে চেপে পালিয়ে গিয়ে শুরু করেছিলেন নিজেদের নতুন এক জীবন। জীবনের ফেলে আসা সেই সব স্মৃতিকে মনে করিয়ে দিতে পুরনো সেই বাইকটি ৬০ বছর পরে ফের খুঁজে পেলেন বর্ষীয়ান দম্পতি বব-জিন।

১৯৫৬ সালে ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালের পেরানপোর্থ হোটেলে প্রধান শেফ হিসেবে চাকরিতে বহাল ছিলেন বব। কিছু দিনের মধ্যে একই হোটেলে পরিচারিকা হিসেবে চাকরিতে য়োগ দেন জিন।

জিনের মা আবার সেই হোটেলেরই প্রধান ওয়েট্রেস। প্রথম দেখাতেই পরস্পরের প্রেমে পড়েন বব ও জিন। তাদের ঘনিষ্ঠতার কথা জানাজানি হয়ে যেতে প্রথমেই আপত্তি তোলেন জিনের মা। জিনের মা সাফ জানিয়ে দেন এত অল্প বয়সে বিয়েকরে সংসার পাতলে গোটা জীবনই নষ্ট হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে জিনকে বিয়ে করতে বদ্ধপরিকর বর। প্রেমিককে সারা জীবনের সঙ্গী হিসেবে পেতে মরিয়া জিনও। অতএব বাড়ির বাধা টপকাতে দু’জনে পালিয়ে যাওয়ার ফন্দি আঁটেন।

তিন মাস ধরে ছকে নেওয়া প্ল্যান অনুযায়ী ঠিক হয়, কর্নওয়ালের আস্তানা ছেড়ে ডামফ্রাই হয়ে গ্যালাওয়েতে গিয়ে গোপনে বিয়ে করবেন তারা।

৬০০ মাইল পথ পাড়ি দিতে তাদের ভরসা ছিল ১৯৪৭ সালে তৈরি এনফিল্ড কোম্পানির ফ্লাইং ফ্লি মডেলের একটি মোটরবাইক। আশ্চর্য ভাবে সেই পরিকল্পনা সফল হয়েছিল।

চলতি বছরে ৭৯ বছরের বর ও ৭৭ বছরের জিন তাদের ৬০তম বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছেন। তবে জীবনের অ্যাডভেঞ্চারের মাঝে কবে যেন বিদায় নিয়েছে পুরনো সাথী সেই মোটরবাইকটি।

কিন্তু কিছু দিন আগে এক ভিন্টেজ র‌্যালিতে আচমকা তেমনই এক দু’চাকার যানের সঙ্গে চোখাচোখি হয়ে যায় ববের। নস্ট্যালজিয়া মাথাচাড়া দিতে লড়ঝড়ে বাইকটি কিনে ফেলেন বৃদ্ধ বব। কিন্তু এই বাইকটি তার সেই পুরানো বাইক কিনা তার উত্তর পেতে শুরু হয় খোঁজ।

বাইকের প্রতিটি পার্টস খতিয়ে দেখে অতীত সন্ধানে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বব ও জিন। হঠাত্‍ ইঞ্জিনের শ্যাফ্ট খুলতেই মিলে যায় সমাধান সূত্র।

সেখানে তখনও পরম যত্নে ভাঁজ করা কাগজে লেখা রয়েছে, ‘এই সেই বাইক, যা আমাদের প্রেমকে বাস্তবে পরিণত করেছে। যাত্রার শুরু থেকেই ও রয়েছে।’

ববের লেখা এই চিরকুটই পেলে আসা দিনের সঙ্গীকে চিনিয়ে দেয়। তাকে ঘিরেই পালিত হয় দম্পতির ৬০তম বিবাহ বার্ষিকী। অনুষ্ঠানে কিংবদন্তী হয়ে যাওয়া বাহনই ছিল সেরা আকর্ষণ। তাকে স্পর্শ করে আবেগে আপ্লুত হন বব-জিনের তিন ছেলেমেয়ে ও দশজন নাতি-নাতনি।

১৯৫৬ সালে যে বাইকের দাম ছিল ২২ পাউন্ড, তাকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে ববের পকেট থেকে খসেছে ৫০০০ পাউন্ড। তবে মধুর স্মৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশকে পেতে কোনও কার্পণ্য করেননি বব।

নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ৯: ৩২ পিএম, ২৮ অক্টোবর ২০১৬,শুক্রবার
এইউ

Share