ওমান থেকে বাংলাদেশ। তার পর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘী গ্রাম। পাড়ি দেয়া হয়েছে অনেক দেশ-সমুদ্র। ত্যাগ করা হয়েছে ধর্ম-স্বজন। অভিযোগ করতে হয়েছে থানায়। ফিরে পেয়েছেন স্ত্রীর স্বীকৃতি। সোমবার গভীর রাতে বিয়েও হয়েছে। এখন সুখেই আছেন স্বামীর সংসারে। একজন রিনার প্রেমকাহিনী এটি।
জানা যায়, বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাটা গ্রামের কৃষ্ণকান্ত তালুকদারের মেয়ে রিনা রাণী তালুকদার দীঘদিন যাবত ওমানে ফার্নিচার ফ্যাক্টরিতে কর্মরত ছিলেন। সেখানে তারসঙ্গে পরিচয় হয় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগন্নাথদিঘী ইউনিয়নের উত্তর বেতিয়ারা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মাঈন উদ্দিনের।
কিছুদিন পর তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ধর্মীয় অনুভূতি। রিনা রাণী প্রেমের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সনাতন হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ওমানে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। এরই মধ্যে নামও পরিবর্তন করে রিনা রাণীর পরিবর্তে রাখা হয় ফাতেমা আক্তার।
মাঈন উদ্দিন ও নবমুসলিমা ফাতেমা আক্তার উভয়ের সম্মতিতে কর্মস্থলে ধর্মীয় রীতি অনুসারে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের দাম্পত্য জীবন সুখেই চলছিল। কিন্তু গত তিনমাস আগে ছুটি নিয়ে মাঈন উদ্দিন বাংলাদেশে আসেন। বাবা-মায়ের অনুরোধে ফাতেমাকে বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।
আগামী সোমবার (২৩ নভেম্বর) পাশের গ্রামে তার বিয়েও ঠিক হয়। কিন্তু এক বন্ধুর মাধ্যমে মোবাইলে এ খবর চলে যায় রিনার (ফাতেমা) কাছে। বিয়ের বিষয়টি নবমুসলিমা ফাতেমা আক্তার কৌশলে জেনে গত শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশে এসে স্বামীর স্বীকৃতির জন্য চৌদ্দগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মাঈন উদ্দিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মাঝে জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে মীমাংসার উদ্যোগ নেয়া হয়।
সোমবার গভীর রাতে উপজেলার বেতিয়ারা গ্রামে তিন লাাখ ৫০ হাজার টাকার দেনমোহরে পুনরায় ফাতেমা ও মাঈন উদ্দিনের বিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়। কাবিন রেজিস্ট্রি করেন কাজী ওবায়দুল হক।
বিয়ের এ খবর জানাজানি হওয়ার পর মঙ্গলবার দিনভর ওই নবদম্পতিকে দেখতে উৎসুক লোকজন বাড়িতে ভীড় জমায়।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট: ০২:৪৫ এএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৫, বুধবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur