পাঁচ বছর পর দেশে ফিরে গুম আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন। পরিবারের অভিযোগ, মিলন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চাইলেও সেই সুযোগ তিনি পাচ্ছেন না। সাদা পোশাকের পুলিশ এবং সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা তাঁকে অনুসরণ করছেন।
আদালতে হাজির হওয়ার আগেই তাঁকে গুম বা হত্যা করা হতে পারে। এহছানুল হক মিলনের স্ত্রী নাজমুন্নাহার বেবি গতকাল রোববার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন।
চাঁদপুর-১ (কচুয়া) আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এহছানুল হক মিলন। তাঁর পক্ষে দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনে জমাও দেওয়া হয়েছে।
নাজমুন্নাহার বলেছেন, ‘দেশে ফিরে গুম ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে মিলন আত্মগোপনে আছেন। পুলিশের নানামুখী তৎপরতার কারণে তিনি চাঁদপুরের আদালতে হাজির হতে পারছেন না। তবে স্থানীয় পুলিশ বলেছে, আদালত চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ডিবি পুলিশের নজরদারি রয়েছে।’
মিলন সাবেক সাংসদ এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিজয়ী মিলন ২০০৮ সালের নির্বাচনে হেরে যান আওয়ামী লীগের মহীউদ্দীন খান আলমগীরের কাছে।
স্থানীয় বিএনপি বলছে, ২০০৮ সাল থেকে গত ১০ বছরে মিলনসহ কচুয়া উপজেলা বিএনপির ৫ শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি মামলায় মিলন দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। জামিন পেয়ে তিনি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ায় প্রায় ৫ বছর কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফেরেন।
নাজমুন্নাহার অভিযোগ করেন, স্থানীয় সাংসদের লোকজন বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে তাঁর স্বামীসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের এলাকাছাড়া করে রেখেছেন। মিলন দেশে আসায় ঢাকা ও চাঁদপুরের বাসাবাড়িতে পুলিশ, ডিবি পুলিশ দিয়ে তল্লাশি ও হয়রানি করা হচ্ছে।
কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, মিলনের বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে কচুয়ার ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশ বাদী হয়ে একাধিক মামলা করেছে। এসব মামলার পলাতক আসামি হিসেবে পুলিশ মিলনকে খুঁজছে।
চাঁদপুরের কোর্ট পুলিশ সূত্র বলেছে, মিলনের বিরুদ্ধে করা ২৬টি মামলাই বিচারাধীন। এ কারণে স্থানীয় আদালতে হাজির না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে পুলিশ খুঁজে বেড়াবে। তবে কচুয়া থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা মিলনের খোঁজে এখনো কোনো অভিযান চালাইনি।’
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘আদালত চত্বরে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য ডিবি পুলিশের প্রতিদিনের নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। অন্য কোনো কারণে নয়।’-প্রথম আলো
বার্তা কক্ষ