Home / বিশেষ সংবাদ / প্রেমের অপরাধে কিশোরীকে বেদম প্রহার
প্রেমের অপরাধে কিশোরীকে বেদম প্রহার

প্রেমের অপরাধে কিশোরীকে বেদম প্রহার

রাস্তায় জ্ঞান হারিয়ে ৬ ঘন্টা পড়ে থাকতে হলো তাকে

প্রেম জাত-কুলের ধারধারে না। যেমন প্রেম করেছিল চন্ডিদাস রজকিনী, লাইলী-মজনু ও শিরি-ফরহাদ। এবার প্রেমের পরীক্ষা দিতে এসে প্রেমিকপক্ষের লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে ৬ ঘন্টাব্যাপী সংজ্ঞাহীনবস্থায় রাস্তায় পড়ে রইল এক কিশোরী।

ওই কিশোরীর নাম শুভ্রদা মন্ডল (১৪)। শুভ্রদা গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়া উপজেলাধীন রাখিলা বাড়ী গ্রামের রাম মন্ডলের মেয়ে।

জানা যায়, বিগত দেড় বছর আগে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলাধীন পাঙ্গাশিয়া গ্রামের বিমলকৃঞ্চ মন্ডলের ছেলে বিঞ্চু মন্ডলের সাথে শুভ্রদার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর মোবাইল ফোন নাম্বারের বিনিময় তাদের প্রেমের সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। একপর্যায় বিঞ্চু শুভ্রদাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ২/৩ বার বাড়িতে আনে এবং শুভ্রদাও বিঞ্চুর বাড়িতে রাতযাপন করে।

ঘটনাটি পরিবারের সকলে অবগত থাকলেও কৌশলগতভাবে শুভ্রদাকে স্থানীয় চেয়ারম্যান আজমীর কাজীকে দিয়ে হুমকিধমকির মাধ্যমে তাড়িয়ে দেয়া হয়। কিন্তু প্রেমিক বিঞ্চু মন্ডল শুভ্রদাকে বিয়ে করবে বলে প্রতিনিয়ত মোবাইল ফোনে প্রেমালাপ চালিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার বিঞ্চু তার নিজ বাড়ীতে শুভ্রদাকে আসতে বলায় শুভ্রদা ওই দিন বিকাল ৩টায় প্রেমিক বিঞ্চুর বাড়ী পৌছে।

এ সময় বিঞ্চুর সামনে তার মা রেখা রানী মন্ডল শুভ্রদাকে টেনে হেচড়ে বাড়ীর সামনের রাস্তায় নিয়ে যায়।

ক্লান্ত শুভ্রদা এসময় রাস্তায় লুটে পড়ে এবং জ্ঞানশূন্য অবস্থায় ওই রাস্তার মাঝেই পড়ে থাকে।

গ্রামের উৎসুক জনতা মেয়েটির করুণ দৃশ্য দেখে এসময় বিন্দুমাত্র সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়নি। এভাবে রাত প্রায় ৯টা পর্যন্ত প্রায় ৬ঘন্টা ওই কিশোরী মশার কামড় খেয়ে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকে।

বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি খবর পেয়ে সেখানে সাংবাদিকদের নিয়ে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে তারা কিশোরীকে সুস্থ্ করে জ্ঞান ফিরিয়ে আনেন। সুস্থ্ হয়ে ওই কিশোরী সাংবাদিকদের উল্লেখিত বক্তব্য পেশ করে।

এসময় প্রেমিক বিঞ্চু মন্ডল পলাতক ছিল। রাত প্রায় ১০টার দিকে থানা পুলিশের সাথে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজমীর আলী কাজী এসে ওই কিশোরীকে ধমক দেয় এরপর থানায় পুলিশ হেফাজতে ওই কিশোরীকে নিয়ে যাওয়া হয়।

কাজী আজমীর আলী বলেন, মেয়েটা ভাল না। এর আগেও ২/৩ বার এ বাড়ীতে এসেছে আমি ওকে তাড়িয়ে দিয়েছি। বলে দিয়েছি তোর বিয়ের বয়স হয় নাই। তবুও আসল কেন?

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিঞ্চু মন্ডল গা ঢাকা দেবার কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মো. একরামুল হক মুন্সী

 || আপডেট: ০৪:২১ পিএম,২৫ অক্টোবর ২০১৫, রোববার

 এমআরআর