সারাদেশ

প্রেমের অপরাধে অমানবিক নির্যাতন!

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় প্রেম করার অপরাধে কলেজছাত্র রফিকুল ইসলামকে (১৮) ডেকে নিয়ে গিয়ে গরম লন্ড্রি মেশিনের ছ্যাঁকা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাতে হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকুড়ি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আহতের পরিবার ও এলাকাবাসীদের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গেন্দুকুড়ি গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের মাদ্রাসাপড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পার্শ্ববর্তী গোতামারী গ্রামের উকিল মাহমুদের ছেলে রফিকুলের। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের ভাই চয়ন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। প্রেম করার অপরাধে চয়ন প্রায়ই মেয়ের ভাইকে বিভিন্নভাবে রফিকুলকে হুমকি দিতেন।

মঙ্গলবার রাতে চয়ন (৩০) তার স্ত্রী রুনা বেগমকে (২৫) দিয়ে মুঠোফোনে প্রেমিকার অসুস্থতার কথা বলে তাদের বাড়িতে আসতে বলেন। রফিকুল তার প্রেমিকার অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে আসেন। রফিকুল আসা মাত্রই চয়ন ও তার মামা লিমন তাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে সাইকেলের রড তালা দিয়ে পেটাতে থাকেন। এসময় বেধড়ক পিটুনিতে এক পর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে খবর পেয়ে গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল ঘটনাস্থলে গিয়ে গুরুতর আহত ছাত্রকে উদ্ধার করে ওই রাতেই হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বুধবার বিকেলে সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রচণ্ড যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে রফিকুল। তার দুই পায়ে অসংখ্য নির্যাতনের দাগ। পুরো পিঠে লন্ড্রি মেশিন গরম করে ছ্যাঁকা দিয়েছে প্রেমিকার ভাই ও মামা।

আহতের বাবা উকিল মাহমুদ বলেন, আমার ছেলেকে যেভাবে লন্ড্রি মেশিন গরম করে ছ্যাঁকা দেয়া হয়েছে তাতে সে অল্পের জন্য বেঁচে গেছে। এমন নির্যাতনের বিচারের জন্য তিনি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।

গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমি রাতেই ঘটনাটি শুনে রফিকুলকে উদ্ধার করে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করিয়ে দেই বলে তিনি জানান।

হাতীবান্ধা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে কলেজছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনাটি শুনেছি। এ ব্যাপারে আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দেয়া হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজ ডেস্ক ||আপডেট: ০৭:৪২ পিএম, ১৮ নভেম্বর ২০১৫, বুধবার

এমআরআর

Share