তাহলে আবেগী প্রেম কি আত্মহত্যার জন্যই? প্রেমিকের সাথে অভিমান করে অকালে ঝরে গেল একটি ফুল, যা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে পরিবারের সদস্যসহ এলাকার মানুষের। মানুষের প্রশ্ন, এ কোন আত্মহত্যার খেলা, যেখানে কম বয়সের আবেগী প্রেম মানুষকে ঠেলে দেয় মৃত্যুর গহীন পথে? হয়তো কমবয়সী মেয়েটির আবেগের সময় তার পাশে কেউ ছিলো না বুঝ-প্রবোধ দেওয়ার মতো। যদি থাকতো তাহলে এই ড্যাফোডিলটি অকালে ঝরে যেতে পারতো না।
আত্মহত্যা মানুষের জীবনের জন্ম ও মৃত্যুর জন্যে কোনো সহজ সমাধান নয়, ইসলামেও আত্মহত্যাকে বারণ করা হয়েছে। কোনো ধর্মই আত্মহত্যাকে আইনত বৈধতা দেয়নি। বেঁচে থাকার অধিকার নিয়েই মানুষ জন্মায়, তাহলে কেনো হঠাৎ করে ফুটন্ত সময়ে নিজকে শেষ করে দেওয়া?
পরিবারের সবার আশা-ভরসা, ভালোবাসা এসবই কি তুচ্ছ হয়ে যায় প্রেম নামক আবেগের কাছে? এমনই ঘটনা ঘটছে চাঁদপুরে, যা মেনে নিতে পরিবারের মানুষসহ সচেতন মানুষদের কষ্ট হচ্ছে।
ঘটনাটি বুধবারের, সংক্ষিপ্ত সময় …তারপর সব শেষ। অকালে ঝরে গেলো শারমিন আক্তার নামের এক কিশোরী। বিস্তারিত জানুন আমাদের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট এর পাঠানো রিপোর্টে …..
চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকায় এসএসসি পরীক্ষার্থী শারমিন আক্তার নামের এক কিশোরী প্রেমিকের সাথে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। বুধবার (৬ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে ওই এলাকার রহমান টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শারমিনের প্রেমিক রাশেদ (২৪)কে আটক করেছে পুলিশ।
শারমিন আক্তার (১৬) সদর উপজেলার মধ্য তরপুরচন্ডী ডাক্তার বাড়ির আলাউদ্দিন ডাক্তারের দ্বিতীয় মেয়ে। সে চলতি বছর চাঁদপুর লেডী প্রতিমা মিত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
আটক প্রেমিক রাশেদ (২০) ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম চান্দ্রা খান বাড়ির মালয়েশিয়া প্রবাসী আউয়াল খানের বড় ছেলে। সে চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র। সে তার মাকে নিয়ে প্রফেসর পাড়ায় ভাড়া বাড়িতে বসবাস করে।
শারমিনের মামা জানান, বুধবার সন্ধ্যায় বাসার সবাই শারমিনকে ঘরে রেখে মার্কেটে যান। মার্কেট থেকে ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ পেয়ে তার মা আমাকে ফোন দেয়। আমি এসে দরজার ভেঙে রাশেদসহ প্রবেশ করি। আমার আগে রাশেদ দৌঁড়ে গিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থা থেকে শারমিনকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে।
রাশেদ জানায়, দীর্ঘদিন যাবত শারমিনের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মোবাইলে কথা বলার সময় এক পর্যায়ে তাদের উভয়ের মধ্যে ঝগড়া হয় এবং শারমিন আত্মহত্যা করবে বলে তাকে জানায়। এ ঘটনায় রাশেদও অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদ রানা শামিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মাসুদ রানা শামিম জানান, প্রেমিক রাশেদের সাথে মোবাইলে ফোন করে কথা বলার পর শারমিন অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যান। লাশ ময়নাতদন্তের পর এর রহস্য বেরিয়ে আসবে । রাশেদকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে পুলিশ শারমিনের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্থান্তর করলে তারে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
||আপডেট: ০৯:০৬ অপরাহ্ন, ০৭ এপ্রিল ২০১৬, বৃহস্পতিবার
চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর