প্রেমিকার বাড়িতে অবরুদ্ধ প্রেমিক, তিন দিন পর মুক্ত

প্রেমিকার বাড়িতে তিনদিন অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিলো প্রেমিককে। পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় তানোরের ওসি রাকিবুলের হস্তক্ষেপে দুই পরিবারের সম্মতিতে পরিণত বয়সে ওই তরুণীকে বিয়ে করার শর্তে মুক্ত হয় ওই প্রেমিক। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর তানোর পৌর এলাকার ভক্তিপুরে। কলেজ শিক্ষার্থী মারুফ (১৯) তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের তোফাজ্জুল হোসেনের ছেলে।

এর আগে শুক্রবার দুপুরে মারুফ ঘরের জানালা দিয়ে বলে, ‘দীর্ঘ চার বছর ধরে আমাদের প্রেম চলছে। আমাদের একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে। আমি রাজশাহীতে পড়ালেখা করি। পাশের আকচা স্কুল সংলগ্ন বানিয়ালপাড়া গ্রামে আমার নানার বাড়ি।’

মারুফ আরও বলে, ‘আমি গত বুধবার সন্ধ্যার দিকে রাজশাহী থেকে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেখান থেকে তুলে এনে আমাকে আটকে রাখা হয়েছে। আমার সামনে এইচএসসি পরীক্ষা। আমাদের কথা হয়ে আছে, পরীক্ষার পরপর অবশ্যই আমার এ প্রেমিকাকে বিয়ে করব। তবে প্রেমিকার পরিবার ও স্থানীয় কাউন্সিলরসহ কয়েকজন মিলে পরিকল্পিতভাবে আমাকে ধরে এনে আটকে রেখেছে।’

তবে ওই তরুণীর পরিবারের একাধিক নারী জানিয়েছেন, মারুফকে আদর-যত্নেই রাখা হয়েছে। তাঁদের মেয়েকে বিয়ে করলেই কেবল তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে এমন কথা বলে দিয়েছেন কাউন্সিলর আরব আলী ও মুনজুর রহমান। তবে এখন পর্যন্ত প্রেমিক মারুফের পরিবার থেকে বিয়েতে সম্মতি দেয়নি।

তানোর পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলর আরব আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘ছেলের পরিবার বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ও মেয়ের বিয়ের বয়স না হওয়ায় বিয়ের আয়োজন করা যাচ্ছিলো না। কিন্তু প্রেমিক মারুফ এই কয়দিন ওই তরুণীর বাড়িতেই সসম্মানে ছিলো। তবে আজ শুক্রবার সন্ধ্যার পরে থানার ওসি রাকিবুল হাসান ওই ছেলে-মেয়ের পরিবারের উপস্থিতিতে প্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধান করে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘মূলত ওই ছেলের সঙ্গে ওই তরুণীর বিয়ে না হলে প্রেমিকা আত্মহত্যা করবে এ খবরে স্থানীয় কাউন্সিলর মুনজুর ও যুবলীগ নেতা টুটুলসহ আমরা কয়েকজন গত তিনদিন ধরেই সমাধানের চেষ্টা করে আসছিলাম।’ কিন্তু তিন দিন ধরে এভাবে ওই যুবককে ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ রাখতে পারেন কিনা এ প্রশ্ন করা হলে, তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি শেষ বিকেলে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছ থেকে জানতে পারি। পরে নতুন কর্মস্থলে যোগদান বিলম্বে করেই নিজে উপস্থিত থেকে উভয়পক্ষের সম্মতিতে এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান করে দিয়েছি। প্রেমিক মারুফও বাড়ি ফিরেছেন।’

Share