কুমিল্লায় ১১ আসনে ৭৩ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, বাতিল ৪৮

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লার ১১টি আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। রোববার সকালে থেকে শুরু করে সোমবার সন্ধ্যা পযন্ত ১১টি আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও রিটার্ণিং অফিসার খন্দকার মো. মুশফিকুর রহমান।

কুমিল্লা-০১ থেকে কুমিল্লা-১১ পরযর্ন্ত ১১ টি আসনে মোট মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ১২১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে দুজন নারী প্রার্থীসহ মোট ৭৩ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। ৪৮ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। দুজন নারী প্রার্থী হলেন, কুমিল্লা-০১ হোমনা-মোঘনা আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য সেলিমা আহমেদ মেরী ও কুমিল্লা-০৬ সদর আসনের বর্মান সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য আনজুম সুলতানা সীমা।

রোববার ও সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুইদিন ব্যাপী জেলার ১১ টি আসনের ১২১ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান জানান, কুমিল্লা-১ আসনে বাতিল করা হয়েছে ৬ জন প্রার্থীর মনোনয়ন, বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৬ জনের। কুমিল্লা-২ আসনে বাতিল হয়েছে ৬ জনের, বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৬ জন প্রার্থীর মনোনয়ন। কুমিল্লা-৩ আসনে বৈধপ্রার্থী ৬ জন, বাতিল করা হয়েছে ৮ প্রার্থীর মনোনয়ন। কুমিল্লা-৪ আসনে বৈধ প্রার্থী ১৩ জন, বাতিল করা হয়েছে একজন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র। কুমিল্লা-৫ আসনে বৈধ ৬ জন, বাতিল করা হয় ৫ জনের। কুমিল্লা-৬ আসনে মনোনয়নপত্রের বৈধতা পেয়েছেন ৫ জন, বাতিল করা হয়েছে ১ জনকে। কুমিল্লা-৭ আসনে মনোনয়নপত্রের বৈধতা পেয়েছে ৬ জন, বাতিল হয়েছে ৪ জনের। কুমিল্লা-৮ আসনে মনোনয়নপত্র বৈধতা পেয়েছে ১১ জন, বাতিল হয়েছে ৪ জনের মনোনয়নপত্র। কুমিল্লা -৯ আসনে ৬ জনের মনোনয়ন পত্র বৈধ হয়েছে, ৩ জনের মনোনয়ন পত্র বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কুমিল্লা -১০ আসনে ৩ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ করা হয়েছে, ৪ জনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। কুমিল্লা – ১১ আসনে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে ৫ জনকে, বাতিল করা হয়েছে ৬ জনের মনোনয়নপত্র।

কুমিল্লার বিভিন্ন আসনে মনোনয়ন বাতিলের তালিকায় যেসব উল্লেখযোগ্য প্রার্থী রয়েছেন তারা হলেন, কুমিল্লা-০৭ চান্দিনা আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিলকরা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক ডেপোটি স্পীকার অধ্যাপক আলী আশরাফের ছেলে মুনতাকিম আশরাফ টিটু। তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্তের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন।

সোমবার যাচাই বাছাইয়ে তথ্য গোপনসহ বেশ কিছু কারনে তার মনোনয়ন বাতিল বলেন ঘোষণা করা হয়। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন এবং এর আগে রোববারের যাচাই বাছাইয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম সরকারের মনোনয়ন বাতিল করা হয়। তিনি কুমিল্লা-০৩ মুরাদনগর আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুরের নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন। দেবীদ্বার উপজেলায় আলোচিত চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস খন্দকারের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তিনি কুমিল্লা-০৪ দেবীদ্বার আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্মান সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছিলেন। কুমিল্লা-০১ হোমনা-মেঘনা আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সেলিমা আহমেদ মেরী’র বিরুদ্ধে মনোনয়ন দাখিল করা পপি লাইব্রেরীর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল মজিদ এর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। কুমিল্লা-০২ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ইন্জিনিয়ার আবদুস সবুর এর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রাথী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করা ব্যারিস্টার নাঈম হাসান এর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

তবে, মনোনয়ন বাতিল হওয়া কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্জ জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে মুরাদনগর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. আহসানুল আলম সরকার কিশোর এবং তাদের আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ তানভীর আহমেদ ফয়সাল, জাহাঙ্গীর সরকার গ্রুপের নেতা বাংগরা পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেনসহ স্থগিত হওয়া প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকরা জানান, মনোনয়ন ফিরে পেতে তারা আদালতের দ্বারস্থ হবেন।

প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ৪ ডিসেম্বর ২০২৩

Share