চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মাসিক সাধারণ সভায় ইউনিয়নের বিভিন্ন স্কুলের ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দের টাকার কথা না জানায় চেয়ারম্যানরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
১১ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে মাসিক সাধারণ সভায় রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মোঃ হযরত আলী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে বিষয়টা জানতে চান। পরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নাজমা বেগম বিষয়টি এড়িয়ে অন্য প্রসঙ্গে চলে যান। সাথে সাথে বাগাদী ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন গাজী ও বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম মিয়াজী বক্তব্য দেন।
সবশেষ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ ঝগড়া না করার জন্য অনুরোধ জানান।
সভায় রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী মোঃ হযরত আলী বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষুদ্র একটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। তা স্থানীয় চেয়ারম্যানরা জানেন না। আমি চেয়ারম্যান ব্যতিত বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও। নিজের এলাকার বিদ্যালয়গুলোর কাজ হবে, আর আমি জানব না। এটা দুঃখজনক।
বাগাদী ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন গাজী বিল্লাল বলেন, আপনার (উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার) মাধ্যমে বরাদ্দগুলো বিদ্যালয়ে যায়। আপনার কাছে জানার আমাদের অধিকার রয়েছে। কোন কিছু এড়ানোর সুযোগ নেই।
বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম মিয়াজী বলেন, ভবন টেন্ডার হয় তা চেয়ারম্যান জানেন না। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাড়া ইউনিয়নের সকল বিষয় চেয়ারম্যানকে জানানো দরকার।
সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা বেগম তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার উন্নয়নে দায়বদ্ধতা শুধু শিক্ষা কর্মকর্তার একার নয়। ইউনিয়নে শিক্ষা কমিটি আছে। আপনাদের সাথে প্রধান শিক্ষকরা কেন সমন্বয় করেননা, তা আপনারা খোঁজ রাখুন। বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে খোঁজ খবর রাখা আপনাদের দায়িত্বের অংশ।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহানাজ বলেন, এখানে ঝগড়া করার জায়গা নয়। চেয়ারম্যানদের জানার অধিকার রয়েছে। ইউনিয়নের যে বিদ্যালয়ের বরাদ্দ রয়েছে, তা অনুলিপির মাধ্যমে জানাবেন। আপনি (উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার) প্রধান শিক্ষকদের প্রতি যে বিরক্ত তা আমাদের কে কখনও জানান নি। আর চেয়ারম্যানরা একজন বিসিএস কর্মকর্তার সাথে এভাবে কথা বলতে পারেন না।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানদের সাথে শুধু শিক্ষা অফিস নয় সকল বিভাগের সমন্বয় করা দরকার। আগামিতে বরাদ্দের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস সদর উপজেলা পরিষদের সাথে স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বারকে অনুলিপি প্রেরণ করবেন।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর সরকারীভাবে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে বিদ্যালয়ের ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য একটি বরাদ্দ দেওয়া হয়। উক্ত ক্ষুদ্র মেরামতের কাজগুলো স্ব স্ব ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবগত না করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার প্রধান শিক্ষকদের মাধ্যমে বরাদ্দের টাকা পরিচালনা করেন।
সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার,১১ মার্চ ২০২১