চাঁদপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে প্রশিক্ষকদের ৭ মাসের বেতন নিয়ে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। একপক্ষ বলছেন তারা সাত মাসের বেতন পাননি।
অন্যপক্ষ বলছেন তাদের নিয়োগ নেই। এজন্য প্রশিক্ষকদের সাত মাসের পাওনা টাকা নিয়ে প্রশিক্ষক এবং কর্মকর্তা,তাদের দুই পক্ষের মাঝে কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি নিয়ে গত ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে। এ
কদিকে যেমন প্রশিক্ষকরা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সাথে অশোভন আচরন করে তাকে লাঞ্চিত করেছেন, অন্যদিকে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাও তাদের ব্যবহারে উত্তেজিত হয়েছেন বারংবার। আর এ নিয়ে গত মঙ্গলবার চাঁদপুর পুরান আদালত পাড়ার জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয় ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে প্রশিক্ষকদের সাত মাসের বেতন নিয়ে অনেক হট্টগোল ঘটেছে। এমন হট্টগোলের কারনে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিজে অফিসকক্ষে থেকেও ভেতর থেকে গেটের মধ্যে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন প্রশিক্ষকরা যাতে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারেন এবং কোন প্রকার ঝামেলা করতে না পারেন।
জানাযায়, প্রায় ৭/৮ বছর পূর্বে চাঁদপুর জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে সেলাই, ট্রেড, মোম সোপিচ, বøকবাটি, মোবাইল সার্ভিসিং এবং বিউটিকিপিশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষনের জন্য মোঃ সোহেল রানা, সালমা আক্তার, রুমা আক্তার, শামীমা নাসরিন ও হাসনাসহ ৫ জন প্রশিক্ষন নিয়োগ দেয়া হয়।
উল্লেখিত এই ৫ জন প্রশিক্ষক জানান, তারাা প্রথমে ২০১১ সাল থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা করে বেতনে চাকরি করেন। পরবর্তীতে গত ১ বছর ধরে ১১ হাজার টাকা করে প্রত্যেকে বেতন পেতেন। কিন্তু জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ, তাদের গত সাত মাসের বেতন আটকে রেখেছেন। প্রশিক্ষকদের অভিযোগ মহিউদ্দিন আহমেদ তার নিজের ক্ষমতা কাটিয়ে তার লাভের জন্য তাদের সাত মাসের বেতন দেননি।
তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাদেরকে বলেছেন, যদি ওই কর্মকর্তার নিজের কিছু টাকা পার্সেনটিজ থাকে, তাহলে সে সত্যে তাদের সাত মাসের বেতন দেয়া হবে। অন্যথায় তারা কোন মাসের বেতনের টাকা পাবেন না বলে জানিয়েছে ওই কর্মকর্তা।
প্রশিক্ষকরা কর্মকর্তার সত্য মেনে না নিয়ে প্রায়ই তাদের বেতন উত্তোলনের জন্য ওই কর্মকর্তার কাছে বেশ কয়েকবার গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালেও ওই ৫ জন প্রশিক্ষক পুরান আদালত পাড়ার জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরে গেলে মহিউদ্দিন আহমেদ তাদেরকে দুর থেকে দেখেই তারা যাতে কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারেন সে জন্য ভেতর থেকে গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে তারা জানান।
এ নিয়ে ওইদিন তাদের মধ্যে অনেক বাকবিতণ্ডা হয়। কিন্তু তারপরেও সাত মাসের বেতন না পেয়ে বরাবরের মতোই ব্যর্থ মনে ফিরতে হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদ যোগদান করার পর থেকে এ কার্যালয়ে নানা অনিয়ম করে চলেছেন। ওই কার্যলয়ের পোগ্রাম অফিসার সাজিয়া আফরিনসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণের টাকা নিয়ে নানা অনিয়ম করে নিজেদের স্বার্থ আদায় করছেন।
এছাড়া মহিউদ্দিন আহমেদ প্রথমে এখানে যোগদান করার পর বেশ কয়েকমাস ধরে অফিস কার্যালয়ের কক্ষকে বাসা বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করে রাত কাটিয়েছেন।
এ ব্যাপারে জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আহমেদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন. আমি ২০১৬ সালের ৩০অক্টোবর চাঁদপুর জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করি। তারা যে বেতন পাওয়ার কথা বলছে তা সঠিক নয়। কারন তাদের নিয়োগই নেই। আমি না জেনে কয়েকমাস তাদের বেতন দেয়ার পর জানতে পেরেছি তাদের নিয়োগটি ভুয়া এবং সঠিক নয়। প্রথমে তারা খন্ডকালিন প্রশিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছেন। পরবর্তীতে হয়তো কোন অদৃশ্য কারনে তারা নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারি নিয়মনীতি অনুযায়ী তারা যে শর্তবলীতে এখানে নিয়োগ পাওয়ার কথা সে শর্তাবলীতে তাদের নিয়োগটি বৈধ নয়। আমি যোগদান করার পর যখন জানতে পারলাম তাদের নিয়োগটি সঠিক নয়, তখন ২০১৫ সালে ম্যাজিস্ট্রেট এসে কাগজপত্র দেখে তাদের নিয়োগ বাতিল বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এখন জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়া আমার কিছুই করার নেই।
কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১:৫৩ পিএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ