চাঁদপুর

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে ২শ কোটি টাকার রি-মডেলিং কাজে অনিয়ম

২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের ৫৪ কি.মিটারের রি-মডেলিং কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

প্রায় ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে এ কাজের ইতোমধ্যে ৯১ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তবে এ কাজের দায়িত্বে রয়েছেন চট্রগ্রাম বিভাগীয় ডিইএন।

যদিও এ রেলপথের বিভিন্ন স্টেশনের নানা কাজ অসম্পূর্ণ রয়েছে বলে দৃশ্যমান আছে।
রেলওয়ে সুত্রে জানা যায়, নতুন করে স্টেশন ভবন নির্মাণ, ব্রিজ নির্মাণ, নতুন করে রেল লাইন নির্মাণ, রেলগেইট নির্মাণ, সিগন্যাল নির্মানসহ বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্রগ্রামস্থ একটি নির্ভর যোগ্য সূত্র জানান, ২০১২ সালে এ কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে করার জন্য দায়িত্ব অর্পণ করেন,ভারতীয় কালিন্দি কোম্পানি লিমিটেডকে। তাদেরকে ২০১৪ সালে কাজ শেষ করার জন্য সময় সীমা বেধে দেওয়া হয়। তারা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারনে ও বিভিন্ন নানা সমস্যা সৃস্টির জন্য যথাযথ সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় বিলম্ব হয়।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কাজের সময় বাড়িয়ে দেন ২০১৬ সাল পর্যন্ত। এ পরও আজও কাজের ২০ ভাগ বাকি রয়েছে বলেও রেলওয়ের একটি সূত্র জানিয়েছেন। এই কাজের নানা অনিয়মের মধ্যে একটি হচ্ছে বলাখাল রেল স্টেশনের প্লাট ফর্ম নির্মাণে পুরাতন ইট ও নি¤œমানের কাজ করা সহ অন্যান্য অনিয়ম করলে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করে এবং নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। দীর্ঘদিন হলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কোম্পানি রয়েল কনস্ট্রাকশন কাজটি আর শুরু করেনি।

এর আগে চাঁদপুর স্টেশনে সড়ক নির্মাণ, প্লাট ফর্মের ও স্টেশন ভবনের কাজ শেষ করে ভবন বুঝিয়ে দেওয়ার পূর্বেই ভবনের পিলারে ফাটল দেখা দেওয়াসহ কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় অনিয়মের অভিযোগ উঠে। পরবর্তীতে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্মকর্তাগণ চট্রগ্রাম থেকে এসে তা তদন্ত করে যান।

এ কাজের প্রথমে টেন্ডারের মাধ্যমে দায়িত্ব পান ভারতীয় কালিন্দি কোম্পানি। তারা কাজ করতে গিয়ে কাজ বন্ধ করে ফেলে রাখেন। পরবর্তীতে কাজ করেন পর্যায় ক্রমে মেসার্স ইস্টান্ডার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি, মেসার্স কামাল কনস্ট্রাকশান কোম্পানি ও মেসার্স রয়েল কনস্ট্রাকশান কোম্পানি লিমিটেড।

স্বাধীনতার পর এই রেলপথের তেমন কোন উন্নয়ন কাজ হয়নি। চাঁদপুর সদরের এমপি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে চাঁদপুর-লাকসাম রেল লাইনের উন্নয়নে প্রায় ২শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ মিলে। ট্রাক লিং কিং, স্টেশন বি¬ডিং রি- মডেলিং,ব্রীজ রি-কনস্ট্রেকশান, ইন্ডার লুফিং সিগন্যালিং ও আন্ডার গ্রাউন্ড অক্সিজেন ফাইবার কমিউনিকেশন কাজের জন্যই এ অর্থ বরাদ্দ মিলে।

বর্তমানে এসব কাজের মধ্যে চিতোষী থেকে লাকসাম পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার নতুন লাইন বসানোর কাজ বাকি রয়েছে। এই কাজে রেলপথ বেলাটিং ও পাথর দিয়ে প্যাকিং হবে। এছাড়া আড়াই কিলোমিটারে ট্রাক লিংকিং বাকি রয়েছে।

এদিকে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা (উপ-সহকারী প্রকৌশলী) লিয়াকত আলীর সাথে যোগাযোগ করলে বলাখাল স্টেশনে নি¤œমানের কাজের কারণে কাজ এলাকাবাসী বন্ধ করে দিয়েছে এ বিষয়ে তিনি অবহিত নন তবে চাঁদপুর কোর্ট স্টেশন ও বলাখাল স্টেশনের প্লাট ফর্মের কাজ সহসাই করা হবে বলে তিনি জানান।

তিনি আরো জানান, রেল পথের ২কি:মি: কাজ বাকি রয়েছে। এ ব্যাপারে চলমান কাজ করা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।

চট্রগ্রাম বিভাগীয় প্রকৌশলী ডিইএন-১ এর সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমি কোন বক্তব্য দিতে পারবো না। এ বিষয়ের দায়িত্ব ডিআর এম সাহেবের। তার সাথে যোগাযোগ করুন।’

ক্যাপশান: চাঁদপুর শহরের প্রধান স্টেশন- কোর্ট স্টেশন ফ্লাটফর্মের বিভিন্নস্থানে ব্যাপক ভাবে ভেঙ্গে, ডেবে যাওয়ায় ও বড়-বড় গর্তের কারনে যাত্রীরা প্রতিদিন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১:৩৩৩ পিএম, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭ মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share