প্রবাসী ভাইয়েরা স্ত্রীর নামে ব্যাংক হিসাব খুলে স্ত্রীর একাউন্টে টাকা পাঠিয়ে থাকে। অনেক প্রবাসী ভাই স্ত্রীকে বিশ্বাস করে ব্যাংকে টাকা জমা হয়েছে কি না বা কত টাকা জমা আছে হিসাব রাখে না। স্বামীকে না জানিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীরা অনেক সময় সেই টাকা আপনজনদেরকে ধার দেয়। কেউবা দিগুন লাভের আশায় বিভিন্ন হায় হায় কোম্পানী, ইন্সুরেন্স কোম্পানী, বিভিন্ন সমিতির প্রতারণার শিকার হয়। টাকা হারানের সংবাদ খুব বেশীদিন গোপন করতে না পেরে স্বামীকে এক সময় বলতে বাধ্য হয়। শুরু হয় দাম্পত্য কলহ। স্বামী কষ্টাজিত টাকা হারিয়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে। কেউবা স্ত্রীকে তালাক দেয়। কেউ বা স্ত্রীকে নির্যাতন করে। সেই রকম কাহিনী পত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যায়। তাই প্রবাসী স্বামীদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে—————-
*** নিজের স্ত্রীর নামে ব্যাংক হিসাব খুলে সংসারের খরচের টাকা পাঠান।
*** নিজের স্ত্রীর নামে ব্যাংক হিসাব না খুলে আপনার ভাই অথবা বাবার নামে হিসাব খূলতে পারেন। তাহলে আপনার স্ত্রী বাংকে টাকা উত্তোলন করার ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকবেন।
*** আপনার বেতন বেশী হলে প্রতি মাসে নিজের ব্যাংক হিসাব থেকে স্ত্রী বা সন্তানের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করতে পারেন। আপনি দেশে গিয়ে অর্থের প্রয়োজন হলে সেই টাকা তুলতে পারবেন। টাকা হারানোর কোন সম্ভাবনা নেই।
ঘটনা একঃ
এক প্রবাসী ভাই জমি কিনে বিল্ডিং তৈরীর জন্য স্ত্রীর নিকট টাকা প্রেরন করে। স্ত্রী স্বামীর টাকা দিয়ে নিজের নামে জায়গা কিনে একটি বিল্ডিং তৈরী করে। বিল্ডিং তৈরীর টাকা যোগান দিতে গিয়ে স্বামীকে অনেক বছর প্রবাসে কাটাতে হয়। বিল্ডিং এর কাজ শেষ হলে প্রবাসী স্বামী দেশে গিয়ে দেখতে পায় স্ত্রী পরকীয়া প্রেমে জড়িত। প্রবাসী স্বামী স্ত্রীকে পরকীয়া প্রেম থেকে ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেয়। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের উপার্জিত অর্থ দিয়ে গড়া জমি-বিল্ডিং-বউকে হারিয়ে লজ্জা ও অপমানে আবার ও প্রবাসে পাড়ি দেয়।
ঘটনা দুইঃ
এক প্রবাসী নিজের উপার্জিত টাকা স্ত্রীর ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখে। অন্য দিকে স্ত্রী সেই টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে দিগুন লাভের আশায় ইউনিপে টু ইউ এর এক এজেন্টকে দেয়। হঠাৎ করে ইউনিপে টু ইউ বন্ধ হয়ে গেলে এজেন্ট টাকা ফেরত দিতে অশ্বিকার করে। প্রবাসী স্বামী দেশে এসেই স্ত্রীর কাছে টাকার হিসাব চাইলে স্ত্রী টাকা হারানোর কথা বললে স্বামী-স্ত্রীর মধ্য দ্বন্ধ শুরু হয়। দাম্পত্য জীবনে অশান্তি চলতে থাকে———————-
ঘটনা তিনঃ
আমাদের দেশে ইন্সুরেন্স কোম্পানীর মাঠ পর্যায়ের কমীরা প্রবাসীর বউদেরকে টার্গেট করে মাঠে নেমেছে। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ অর্থ নিয়ে ইন্সুরেন্স করাচ্ছে। কয়েক বছর কিস্তির টাকার পরিশোধ করার পর পরবর্তীতে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়ে পলিসি বাতিল করতে চাইলে পূর্বের টাকা আর ফেরত পাচ্ছে না। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে মাঠ কর্মী ও অফিসের কর্মকর্তারা সেই টাকা উত্তোলন করে নিজেরা আত্মসাৎ করে চলেছে।
উপরোক্ত তিনটি ঘটনা পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, প্রবাসী স্বামীর টাকা দিয়ে স্ত্রীরা বেশী অর্থ লাভের আশায় প্রতারিত হচ্ছে। তাই পাঠক আপনি যদি প্রবাসী হয়ে থাকেন তাহলে সাবধানে পথ চলবেন—- আর নিজেদের উপার্জিত টাকা কোন খাতে বিনিয়োগ করবেন অভিজ্ঞ কারো কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নিজেই সিন্ধান্ত নিবেন।
পরিশেষে, আপনাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এটাই আমার প্রত্যাশা।