“প্রধান বিচারপতির আরেকটি ’হক’ কথা”

রাব্বীর মামলা নিয়ে শুনানির এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মিস্টার অ্যাটর্নি, রাব্বীর এফআইআর (এজাহার) গ্রহণ করতে বাধা কোথায়?

পুলিশ অ্যাকশন নিতে গিয়ে রাব্বীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করেছে। এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হলে এটা বিচারেই নিষ্পত্তি হবে। এসআই মাসুদ যদি দোষী সাব্যস্ত হয় হবে। আপনি আগেই কেন এজাহার নেয়ার পথ বন্ধ করে দিচ্ছেন।’

বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকতা গোলাম রাব্বীকে নির্যাতনকারী মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ শিকদারের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার সকালে এ আদেশ দেন।

আদালতে রাব্বীর পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ওই আবেদনের শুনানি গ্রহণকালে প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে এসব কথা বলেন।

শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, ‘তিনজন আবেদনকারী হাইকোর্টের রিট করার পরিপ্রেক্ষিতে রাব্বীর অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন হাইকোর্ট। এভাবে আদেশ দিলে সবাই পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসবে। হাইকোর্ট কী এভাবে আদেশ দিতে পারে?’

তিনি বলেন, ‘পুলিশের সবাই খারাপ না। রাব্বীকে নির্যাতন করা হয়েছে অভিযোগটি সত্য নয়। রাব্বী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে অসহযাগিতা করেছে। এসআই মাসুদ শিকদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে তাকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়েছে।’

এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্ত এটা বিভাগীয় ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে, এটা ডিপার্টমেন্টাল বিষয়। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা যাবে। তাই অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে বাধা কোথায়? এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হলে এটা বিচারেই নিষ্পত্তি হবে। আপনি আগেই কেন এজাহার নেয়ার পথ বন্ধ করে দিচ্ছেন।’

গত ১৮ জানুয়ারি এসআই মাসুদ শিকদারের বিরুদ্ধে রাব্বীর অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে মোহম্মদপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই আদেশ ২১ জানুয়ারি স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। একই সঙ্গে মামলাটি শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠানো হয়।

আর হাইকোর্টের আদেশের উপর দেয়া স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে রিট আবেদন করেন রাব্বীর আইনজীবী। আজ ওই আবেদনের উপর শুনানি হয়।

প্রসঙ্গত, সুরেন্দ্র কুমার সিনহা প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিচার ব্যবস্থাকে আরো গতিশীল করতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেন। এসব করতে গিয়ে অবশ্য তিনি অনেকের কাছে সমালোচিতও হয়েছেন, রাস্তায় নেমেছে সব দলেরই আইনজীবীরা। তাতেও পিছ পা হননি বিচারপতিদের প্রধান। আর তাই তিনি এখন বিচারপ্রার্থীদের খুবেই কাছের মানুষ, আশার আলো।
ওবায়দুল্লাহ সনি, সংবাদকর্মী, সূত্র-বাংলামেইল

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ২:২৭ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬, বুধবার

ডিএইচ

Share