চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করলো প্রশাসন। এদিকে ৪ মামলায় আড়াই হাজার আসামি করে মামলা করা হয়। এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এর আগে কুমিল্লার নানুয়া দীঘির পাড়ে একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন রাখার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তা দেখে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মুসল্লীদের মাঝে উক্তজনা সৃষ্টি হয়। গত ১৩ অক্টোবর বুধবার হাজীগঞ্জ বাজারে এশার নামাজ শেষে প্রতিবাদ মিছিল বের করে বড় মসজিদের মুসল্লীগন। তাদের সাথে যোগ দেন কিছু উঠতি বয়সের যুবক শ্রেনীর তাওহীদি জনতা।
এক পর্যায়ে তারা হাজীগঞ্জ মধ্যবাজারে মিছিলটি নিয়ে আসলে শ্রী শ্রী জিউর আখরা মন্দির ভাংচুর চালায়। তা প্রতিহত করতে পুলিশ ও বাজারের একশ্রেণীর যুবক এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বস্থানীয়রা প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এ সময় মন্দিরে থাকা প্রায় কয়েক শতাধিক হিন্দু লোকজন এদিক সেদিক ছুটাছুটি শুরু করে। বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে ফেলে।
হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ এক পর্যায়ে রাবার বুলেট, কাদাঁনী গ্যাস নিক্ষেপ করে। তার পরেও বন্দির ভাঙচুর ঠেকাতে না পেরে এক পর্যায়ে গুলি চালায় পুলিশ। এতে ৪ জনের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলো উপজেলার বড়কুল ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের আলামিন(১৮), চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকার বাবলু ও রান্ধুনীমুড়া সেকান্দার আলী বেপারী বাড়ীর ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে ইয়াছিন হোসেন হৃদয় (১৫) ও একই এলাকার আব্বাসের ছেলে শামীম (২২)।
এদিকে দফায় দফায় হামলায় হাজীগঞ্জের প্রায় ৮ টি মন্দিরে হামলা চালায়। জিউর আখড়া, নবদুর্গা, ত্রীশুল, ত্রী নয়নী, জমিদার বাড়ি এবং বলাখাল ও রামপুর এলাকার মন্দিরে।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুইটি ও মন্দিরের পক্ষ থেকে দুইটি মোট চার মামলায় প্রায় আড়াই হাজার আসামি।এর মধ্যে এ পর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় গত ১৩ অক্টোবর বৃধবার রাত ১২ টার দিকে এ ঘটনায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনা আক্তার। পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে বিজিবি ও ম্যাজিস্ট্রেট ।
১৮ অক্টোবর সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোমেনা আক্তার ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়।
এদিকে মন্দির ভাঙচুর ও নিহতদের বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইফ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, জাতীয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লা চৌধুরী, চট্রগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছিরউদ্দিন ভৃঁইয়া, সাধারন সম্পাদক আবু নঈম পাটোওয়ারী দুলাল প্রমুখ।
হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, ‘আহত ২১ জনের মধ্যে আমাদের অনেক পুলিশ এখনো হাসপাতালে আছে। চার মামলায় হামলাকারীদের শনাক্ত করে এ পর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করা হয়েছে।’
এই ঘটনার বিষয়ে পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, ‘পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা বিষয়টি অভজারে আছি। এখন কোন কিছু বলতে পারবো না।’
স্টাফ করেসপন্ডেট, ১৮ অক্টোবর ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur