শিক্ষকদের প্রত্যাশা পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি বলেছেন,‘ শিক্ষকের প্রত্যাশা পূরণে আমরা আন্তরিক। আমরা সবাই বিশ্বাস করি, শিক্ষকের কাছে প্রত্যাশা করবো কিন্তু শিক্ষকের প্রত্যাশা পূরণ করবো না–তা হয় না। আমাদের যে সীমাবদ্ধতা আছে সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে। শিক্ষকের আর্থিক-সামাজিক নিরাপত্তা ও সম্মানের ব্যবস্থা করতে হবে । ’
বৃহস্পতিবার ২৭ অক্টোবর ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ভালো কিছু চাইলে ভালো পরিবেশ তৈরি করতে হবে। অবকাঠামো উন্নয়ন যেমন জরুরি তার চেয়ে বেশি জরুরি শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা। সেই পরিবেশ শুধু ইট-কাঠ-বালুর অবকাঠামো দিয়ে হয় না, সেই পরিবেশ শুধুমাত্র প্রযুক্তি দিয়ে হবে না। শিক্ষকের মনে যদি প্রশান্তি থাকে, শিক্ষকের মনে যদি উৎসাহ থাকে, তাহলে শিক্ষার পরিবেশ সত্যিই যথার্থ হয়ে উঠবে। কাজেই আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে চাই। সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে চেষ্টা করছি।’
দীপু মনি বলেন, ‘একটি সুন্দর সমাজ ও জাতি গঠনে শিক্ষকের ভূমিকা অপরিসীম। সারা জীবনের জন্য যিনি আমাদের গঠন করে দেন তিনি হলেন শিক্ষক। তিনি আমাদের মানুষ হতে শেখান, দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করে দেন, আমাদের পুরো মনটাকে তৈরি করে দেন, আমাদের মধ্যে স্বপ্ন জাগিয়ে দেন এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে নিয়ে যান। আমাদের পুরো জীবনে শিক্ষকের অনন্য ভূমিকা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি নিজে একজন শিক্ষকের সন্তান। সেই হিসেবে আমি গর্বিত। আমরা শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে অনেক কাজ করছি, অনেক কথা বলছি। অবশেষ আমাদের শিক্ষকের কাছেই যেতে হবে। শিক্ষক যদি ঠিক থাকেন তাহলে সত্যিকার অর্থে শিক্ষাব্যবস্থায় যে মান আমরা চাই তা পাবো।’
তিনি আরও বলেন,‘শিক্ষকের সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, সহমর্মিতা– এগুলো ভীষণ জরুরি। আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা থেকে অপবাদগুলো দূর করার চেষ্টা করেছি। তার মধ্যে একটি প্রশ্ন ফাঁস– সেটা বন্ধ হয়েছে। তারপরও দু-একটি জায়গায় প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা হয়। কিন্তু ব্যত্যয় ঘটে সেখানে কোনও একজন ব্যক্তি বা কয়েকজন ব্যক্তি জড়িত থাকে। আমরা যদি দেখি, তারা শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত– তারা কিন্তু সমগ্র শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন না। সমগ্র শিক্ষক সমাজের মধ্যে একজন, দু’জন বা তিন জনও যদি অনৈতিক কিছু করেন তার দায় সবাইকে নিতে হয়। সে জন্য আমাদের সবাইকে খুব সচেতন থাকতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষার সময় আমরা চাই একদম নকলমুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা হবে। কোথাও যদি শিক্ষক মনে করেন, আমার ছাত্র আমার প্রতিষ্ঠানকে আরও বেশি ভালো ফলাফল করতে হবে, তাহলে সেটি শিক্ষকের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করে। সেটিও যেন না থাকে। আমাদের সবার সেই প্রচেষ্টা থাকতে হবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আজকে সারা দেশের সব শিক্ষককে প্রশিক্ষণের মধ্যে নিয়ে আসবার কার্যক্রম আমরা শুরু করতে যাচ্ছি। শুধু শিক্ষক নয়, শিক্ষা প্রশাসন ও শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত অনেকেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আগামি দিনেও নেবেন। এ বছরের শেষ নাগাদ প্রশিক্ষণগুলো শেষ করবো। এ পর্যন্ত দু’ লাখ ৩০ হাজারের বেশি শিক্ষককে সাইক্লোজিক্যাল পারস্কেটিভে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্তত দু’জন করে কাউন্সিলিংয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক থাকবেন।’
২৭ অক্টোবর ২০২২
এজি