আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ভবন কিংবা নিকটতম স্থানে নেই কোন লাশ ঘর। যার কারনে হাসপাতালে কোন অজ্ঞাত রোগীর মৃত্যু হলে কিংবা দুর্ঘটনায় কোন মানুষের মৃত্যু হলে হাসপাতালের সিঁড়ির নিচে দিনভর লাশ পড়ে থাকার কারনে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের।
খবর নিয়ে নিয়ে জানা গেছে সরকারি হাসপাতালটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সেখানে লাশ রাখার জন্য কোন লাশঘর নির্মান করা হয়নি। দীর্ঘ কয়েক বছর আগে থেকেই চাঁদপুর পৌর বাস টার্মিনাল সংলগ্ন স্বর্ণখোলা এলাকায় একটি স্থায়ী লাশঘর নির্মাণ করা হয়। আর দীর্ঘকাল ধরে ওই লাশঘরেই জেলার বিভিন্নস্থানের নানা ঘটনায় মৃত্যুবরণকারীদের লাশের ময়না তদন্ত করা হয়।
দেশের বিভিন্ন জেলার সরকারি হাসপাতালে নিকটতমস্থানে লাশঘর থাকলেও কিংবা হাসপাতালে লাশঘর রাখার নিয়ম থাকলেও চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের ভবন নির্মানের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তা নেই।
হাসপাতালের স্থানে কোন লাশঘর না থাকার কারনে দেখাযায়, যখন কোন রোগীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। তখন ওই মৃতদেহ হাসপাতালের বেডে কিংবা জরুরী বিভাগের কাছে সিড়ির নিচে দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থাকে।
যখন কোন হত্যা মামলা কিংবা কোন সড়ক দুর্ঘটনার কারনে কারো মৃত্যু হয়, তখন দেখাযায় ওইসব ঘটনা পুলিশ কেস হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ সেখানে গিয়ে যখন লাশের সুরুতহাল তৈরি করে তখন লাশ রাখার স্থানে প্রচন্ড মানুষের ভিড় জমে।
অনেক সময় দেখা যায়, দিনভর অনেক লাশ পড়ে থাকে ওই সিড়ির নিচে। হাসপাতালের কড়িডোরে এবং সিড়ির নিচে যতক্ষন ধরে লাশ পড়ে থাকে ততক্ষণ দেখাযায় ওইস্থানে প্রত্যক্ষদর্শীদের কমবেশি ভিড় জমেই থাকে। নিহত ব্যাক্তির স্বজনদের কান্না এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের এমন ভিড়ের কারনে তখন ওইস্থান দিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা । অন্যান্য রোগীরা ঠিকমতো যাতায়াত করতে পারে না।
যখন এমন ঘটনা ঘটে তখন দেখায্য়া পুরুষরা মানুষের ভিড় ঠেলে কোন রকম যাতায়াত করলেও নারীদেরকে দীর্ঘসময় ধরে অপেক্ষা করতে হয় কিংবা হাসপাতাল থেকে বের হয়ে বিকল্প স্থান দিয়ে তাদের নিদিষ্ট চিকিৎসকদের কাছে যেতে হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে হাসপাতাল ভবন কিংবা নিকটতমস্থানে একটি লাশঘর জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোঃ সফিউল আলমের সাথে কথা হলে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, হাসপাতালটি যে ক’টি বেডের নির্ধারণে করা হয়েছে তা এখন তার থেকে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি আড়াই,শ শয্যা করার কারনে আমাদের অনেক রুমের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় অনেক চিকিৎসকেরও আলাদা রুম দেয়া যায় না। তাই রুম এবং জায়গার কারনে এখানে লাশঘর করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এমও) ডাঃ আসিবুল আহসান চৌধুরীর সাথে আলাপকালে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, হাসপাতালের নিকটতমস্থানে একটি লাশঘর করার জন্য পৌর মেয়রের বরাবর দুই লিখিত চিঠি দেয়া হয়েছে। তাতেও কোন কাজ হয়নি।
তিনি আরো বলেন, তবে এখানেু একটা লাশঘরের খুবই প্রয়োজন। কারন আমরা যখন কোন লাশের ময়নাতদন্ত করতে স্বর্ণখোলা লাশঘরে যাই তখন দেখা গেছে সেখানের পরিবেশ তেমন ভালো নয়, অনেক ময়লা আর্বজনা থাকে। হাসপাতালের কাছাকাছি লাশঘর হলে দেখাগেছে চিকিৎসাসেবার ক্ষেত্রে আমাদের জন্য ও ভালো হয়। হাসপাতালের নিকট একটি লাশঘর নির্মান করার জন্য আমরা আবারো মেয়রকে লিখিত আবেদন করবো।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি