পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চাঁদপুর শহরে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। যানজটের জালে আটকা পড়ছে শহরবাসী ও ঈদে ঘরমুখো মানুষজন। জেলার বাইরে থেকে রিজার্ভ করে যাত্রীদের নিয়ে আসা যানবাহনগুলো যোগ হয়ে চাঁদপুরে যানজটের মাত্রা অন্যান্য বছরের তুলনায় বৃদ্ধি করেছে।
রিজার্ভে যাত্রী নিয়ে আসা যানবাহনগুলো জেলা থেকে খালি ফেরে না। আবার পুনরায় যাত্রী নিয়ে জেলা শহর থেকে বের হয়।
তাই এ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় যানজট বেশি মনে হয়েছে। ঈদকে সামনে রেখে যানজটের তীব্রতা আরো বেড়ে গেছে।
ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই শহরে বাড়ছে মানুষের উপন্থিতি। একই সাথে বাড়ছে রিক্সা, অটো রিক্সা , সিএনজি স্কুটার , মাইক্রোবাস , মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন।
ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, বরিশাল , চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ঈদ করার জন্য আসা ঘরমুখো মানুষজন যাতায়াত করার জন্য যানবাহনের সংখ্যাও বেড়ে যায়। জেলার বাইরে থেকে আসা যাবাহন গুলো শহরে প্রবেশ করার কারনেই এমন যানজটের সৃষ্টি হয় বলে মনে করেন শহরবাসী।
এদিকে যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখতে গত ২০ রমজান থেকে ট্রাপিক পুলিশের পাশাপাশি জেলা স্কাউট ও রোভার স্কাউট সদস্যরা কাজ করছে।
প্রতিদিন শহরেই বেরুলেই দেখা যায় বাস স্ট্যান্ড এবং মিশন রোড হতে শুরু করে মরহুম আবদুল করিম পাটওয়ারী সড়ক, শহীদ মুক্তিযুদ্ধা সড়ক , হাজী মহসীন রোড , নতুন বাজার হতে পালবাজার পর্যন্ত ভয়াবহ যানজট লেগেই আছে। আর এই যানজট নিরসনে কঠোর পরিশ্রম করছেন স্কাউট সদস্যরা।
আগামি ৭ জুলাই সারাদেশে একযোগে পালিত হবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল ফিতর। দেশের সকল মুসলমানদের সাথে চাঁদপুরের মুসলমানরাও মেতে উঠবে ঈদুল ফিতরের আনন্দে। সর্ববৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসব পালনে প্রতিবছরই দেশের দূর-দুরান্তে জীবিকার প্রয়োজনে আটকে থাকা মানুষগুলো নাড়ির টানে ফিরে আসছেন দেশের বাড়ি। ঈদকে ঘিরে মানুষ আর যানজটে নাকাল হয়ে উঠে জেলার সিকি কোটি মানুষের প্রিয় চাঁদপুর শহর।
বিগত দিনের অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায় জেলার ট্রেন স্টেশন, লঞ্চঘাট ও বাস ষ্টেশনগুলোর প্রধান স্ট্রান্ডলো শহরের প্রাণকেন্দ্র কালিবাড়ি এলাকার কাছাকাছি হওয়ায় সারা বছর ছোট্ট এই শহরটিতে যানজট লেগেই থাকে। তাছাড়া মাত্রারিক্ত সিএনজি অটোারক্সা যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটি সূত্র থেকে জানা যায় শহরে এখনো প্রায় সহ¯্রাধিক সিএনজি আটো-রিক্সা লাইসেন্স বিহীন অবৈধবাবে চলাচল করছে। এসব সিএনজি আটো রিক্সাগুলোর মালিকরা ট্রাফি পুলিশকে মাসিক মাসোয়ারা মাধ্যমে ম্যনেজ করেই তাদের এহেন কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
এতে করে সরকার মোটা অংকের রাজস্ব থেকে সরকার বঞ্চিত হচ্ছে তা অনায়শেই বলা যায়। অপর দিকে গ্যাস চালিত নতুন অট্রো রিক্সা-গুলো এলনো পৌরসভার লাইসেন্সের আওতায় না আসলেও এ ব্যপারে কর্তৃপক্ষ কিছুটা নিরব রয়েছে।
এছাড়া ধারণক্ষতার চেয়েও কয়েকগুণ বেশি সিএনজি, অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত অটোবাইক শহরের চলাচলের লাইসেন্স দেয়ায় নগর কতৃপক্ষের প্রতি শান্তিপ্রিয় শহরবাসীর কিছুটা চাপা ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে শহরের কালিবাড়ি শপথ চত্ত্বর, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ, ছায়াবাণীর মোড়সহ শহরের বিভিন্ন গুত্বপূর্নস্থানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রি উঠা নামা করাও যানজটের অন্যতম কারণ।
শনিবার (০২ জুলাই) জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় বিভিন্ন বক্তাদের বক্তব্যে শহরের যানজটের বিষয়টি উঠে আসলে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুর সবুর মন্ডল ও পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার তাদের বক্তব্যে ঈদে যানজট নিরসনে ব্যপক প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন। আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে আনন্দময় করতে শহরেকে অবশ্যই যানজট মুক্ত রাখা হবে। এবং ঈদ মার্কেট করতে আসা ক্রেতাসহ সর্বধারণকে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। তারা জানান কোনো মতেই শহরে ট্রক্টর ও লাইসেন্স বিহীণ অবৈধ সিএনজি-মোটরসাইকেল চলতে দেয়া হবে না। এছাড়াও রমজানের আগেই শহরকে ফুটপাত ও অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য পৌর মেয়রের নির্দেশে পৌর-পরিষদ সাহসি ভূমিকা রাখাতে দেখা গেছে।
শহরবাসীর দাবি আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে লাইসেন্স বিহীন অবৈধন রিক্সা, সিএনজি, অট্রো-রিক্সাগুলো এখনি যেনো জব্দ করা হয়।
পাশাপাশি শহরের যত্রতত্র সিএনজি থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা বন্ধ ও পাশ্ববর্তী জেলা থেকে আসা সিএনজিও শহরে প্রবেশ করতে না দেয়ার ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা জরুরি।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি