চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী সুলতানিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে আনা যৌন হয়রানির অভিযোগকে “মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” দাবি করে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রথমে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এবং পরে মাদ্রাসা সংলগ্ন প্রধান সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক মালেককে শাহরাস্তি থানা পুলিশ আটক করে। এ ঘটনার পর মাদ্রাসায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থীদের দাবি “অভিযোগ সাজানো” মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, “মালেক স্যার অত্যন্ত ভালো মানুষ, সৎ ও নীতিবান শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো।”
তারা আরও দাবি করেন, অভিযোগকারী শিক্ষার্থী জাফরিন ও আকলিমা আক্তারের বিরুদ্ধে পূর্বেও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ ছিল। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য অনুযায়ী, “যেই মেয়েটি অভিযোগ করেছে, সে আগে কখনো পড়ালেখায় ভালো ছিল না এবং তার বাইরের ছেলেদের সঙ্গে চলাফেরা ছিল।”
এলাকাবাসীর বক্তব্য: একাধিক এলাকাবাসীও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, অভিযোগকারী শিক্ষার্থীদের বাইরের ছেলেদের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি শিক্ষক মালেক কয়েকবার দেখেছেন এবং তিনি তাদের সাবধান করেছিলেন। তাদের দাবি, এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষক মালেককে জড়িয়ে “মিথ্যা অভিযোগ” দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীরা আরও জানান, মাদ্রাসা প্রতিদিন সকাল ৮টায় খোলে এবং শিক্ষকরা আসেন ৯টায়। কিন্তু অভিযোগকারী ছাত্রী জাফরিন নাকি সকাল ৭টায় মাদ্রাসায় এসে বাইরে ঘোরাফেরা করতেন এবং বাইরের ছেলেদের সঙ্গে হাঁটতে দেখা যেত।
তারা আরও সন্দেহ প্রকাশ করেন যে, মাদ্রাসার সরকারি ভবন নির্মাণকে কেন্দ্র করে কিছু চাঁদাবাজের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা এবং নবাগত ম্যানেজিং কমিটিতে “অযোগ্য লোক ঢোকানোর” তৎপরতার জের ধরেই ঘটনাটি ঘটতে পারে।
শিক্ষক মহলের বক্তব্য:মাদ্রাসার সিনিয়র সহকারী শিক্ষক খোরশেদ আলম, সরোয়ার ও রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা মালেক স্যারকে যতদিন দেখেছি, তিনি অত্যন্ত ভালো চরিত্রের মানুষ। তার কোনো খারাপ রেকর্ড নেই। আমরা নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।”
মাদ্রাসার সহকারী সুপার মাওলানা আমিনুল হক আশরাফি জানান, “ঘটনার পর আমরা রবিবার বসে সমাধান দেওয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু তার আগেই পরিকল্পিতভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদি তার বিরুদ্ধে কোনো সত্য তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে আমরাই আইনগত ব্যবস্থা নেব। আপাতত আমরা তার দ্রুত মুক্তি চাই।”
কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি: মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীরা জানান, “আগামী দুই দিনের মধ্যে শিক্ষক মালেককে মুক্তি না দিলে আমরা টানা অনশনসহ কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হব।”
প্রতিবেদক: মুসাদ্দেক আল আকিব/
৯ ডিসেম্বর ২০২৫
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur