ফরিদগঞ্জে প্রতিবন্ধী জান্নাতের ভাই থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত

চাঁদপুর-লক্ষিপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের,ধানুয়া এলাকার প্রত্যাশী চ’মিলের উত্তরে রাস্তার পাশে বসে থাকা প্রত্যাশী গ্রামের বাহারদুর খান বাড়ির প্রতিবন্ধী জান্নাতের একমাত্র ভাই উপার্জনক্ষম শরিফ হোসেন থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু শয্যায়।

প্রতিবন্ধী জান্নাতের জীবনের প্রতিটি বাকেই যেন বিপদ আর বিপদ,জন্মের কয়েক বছর যেতে না যেতেই বাবার না ফেরার দেশে চলে যাওয়ায় সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। তার পর সংসারের হাল ধরেন প্রতিবন্ধী জান্নাত।

রাস্তার পাশে দীর্ঘক্ষণ বসে থেকে মানুষের দেওয়া টাকা নিয়ে কোন রকমে চলছে সংসার। এই রাস্তায় যাওয়া আসা করা এক ড্রাইভার তার দীর্ঘদিনে বসে থাকতে দেখে দয়া হয় তার। সেই ড্রাইভার এক সময়ে বিয়ে করেন প্রতিবন্ধী জান্নাতকে। সে সংসারে ৯ বছরের একটি মেয়ে ও আছে, গত কয়েক বছর পূর্বে ড্রাইভার স্বামী গাড়ি দুর্ঘটনায় করে বসে এবং এই সড়ক দুর্ঘটনায় হত্যা মামলায় জেলে রয়েছেন তিনি।

এটা তো জান্নাতের জীবনের দুর্ভোগের কথা। জান্নাতের বিয়ে হওয়ার পর তার এক মাত্র ভাই শরিফ সংসারের হাল ধরে কোন রকমেই স্ত্রী ও এক সন্তান নিয়ে জীবন যাপন করছিলেন। গত বছরে রমজান মাসের খানিক পূর্বে শরিফ জানতে পারেন তার শরীরে এক ভয়াবহ রোগ বাসা বেধেছে সেই রোগের নাম থ্যালাসেমিয়া।

শরিফের মা জানিয়েছেন প্রতিনিয়ত শরিফের রক্তের কনিকা নষ্ট হয়ে শরীরের রগ শুকিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার ভিবিন্ন হাসপাতালে পরিক্ষা নিরিক্ষার পর ডাঃ তাকে জানিয়েছিলেন এই রোগের চিকিৎসা ভারতের মাদ্রাজ ছাড়া ভাল চিকিৎসা নেই । আমাদের দেশে এই চিকিৎসা করালে ও ভাল হওয়ায় সুযোগ মাত্র ৫০%। কিন্তু শরিফের এই চিকিৎসা করানো তো দুরের কথা এই মুহুর্তে ভাত
জোগাড় করারও ক্ষমতা নেই তাদের কিন্তু কিভাবে করবে এই রোগের চিকিৎসা।

চিকিৎসক জানিয়েছেন এই রোগের চিকিৎসা করাতে প্রায় ১০ লাখ টাকা লাগবে। কিন্তু এতো টাকা কোথায় পাবে অসুস্থ শরিফের পরিবার?

প্রতিনিয়ত কাঁদছেন আর কাঁদছেন ঔষুদ কেনার টাকা ও নেই, ধীরে ধীরে মৃত্যূর কোলে ঢলে পড়ছে শরিফে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন প্রতি মাসে ২৬ হাজার টাকার ঔষুধ লাগবে, টাকার অভাবে এখন ঔষুধ ও খেতে পারছেন না।

শরিফ এখন ঠিক মত কথা ও বলতে পারছেন না সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে একটু বাচার আকুতি জানিয়ে বলেন, আমাকে বাচার জন্য একটু সাহায্যে করুন আমি বাচতে চাই, আমার একটা বাচ্চা আছে আমার একটা প্রতিবন্ধী বোন আর মা আছে আমাকে বেচে থাকার জন্য দয়া করে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।

এ সময় শরিফের ৭ বছরের মায়ের আকুতিতে উপস্থিত সকলের চোখের কোনে জল এসে পড়ে।

শরিফের মা কুলসুমা বেগম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমার একটা মাত্র ছেলে কাজ কর্ম করে সংসার চালাতো। আজ সেই ছেলে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় সংসারে তার বোন প্রতিবন্ধী জান্নাত দীর্ঘক্ষণ রাস্তার পাশে বসে থেকে মানুষের দেওয়া যে টাকা পায় সেই টাকা দিয়েই সংসার চালান।

শরিফের পাশে দাড়ানোর জন্য এলাকার জানান, সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহবান করেন।

প্রতিবেদক:শিমুল হাছান, ২ জুলাই ২০২১

Share