চাঁদপুর শহরের আশ-পাশের আশ্রয়ন প্রকল্পগুলোতে প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে নিয়ে মাথা গোঁজার জন্য একটু আশ্রয় চান হতদরিদ্র বিধবা মা আয়শা বেগম।
যে কিনা চারবার আবেদন করার পরও তার কপালে সরকারি কোন আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর জুটেনি।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষা করে রাতে গিয়ে থাকতে হয় অন্যের ভাড়া বাসায়।
এভাবেই আশ্রয়হীন হয়ে দীর্ঘ ১০বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন চাঁদপুর শাহরাস্তি উপজেলার মেহের কালী বাড়ি এলাকার রাজ্জাক জমাদারের স্ত্রী বৃদ্ধ আয়শা বেগম।
বর্তমানে চাঁদপুর শহরের পুরাণ বাজার পাটওয়ারীর পুল নামক স্থানে একটি বাড়িতে ভাড়াটিয়া হয়ে বসবাস করছেন।
স্বামীহারা বৃদ্ধ আয়শা বেগম জানায়, ‘প্রায় ৩০ বছর আগে তার প্রথম স্বামী টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তারপর ২য় বিয়ে হয় আ. রাজ্জাক জমাদারের সাথে। সে বৃদ্ধ বয়সে পেটের তাগিদে মাঝে মাঝে রিকশা চালান। কিন্তু তাদের কোন ভিটে মাটি নেই। এজন্য তাদেরকে প্রতিমাসে ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় বাসা ভাড়া থাকতে হয়।’
আয়শা বেগম প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে নিয়ে ভাড়া বাসা থাকার মতো তেমন সামর্থ নেই। প্রতিদিন মানুষের কাছে যা পান তা দিয়েই চলে সংসার।
আয়শা বেগম জানায় , প্রতিবন্ধী শিশুপুত্র ইব্রহিম খলিলকে নিয়ে প্রায় ১০ বছর ধরে ভিক্ষাবৃত্তি করে দিনযাপন করছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সারাদিনে আয় হয় কখনো ৩শ টাকা কখনো বা ৪ শ থেকে ৫শ টাকা।
বর্তমান সময়ে যা দিয়ে ঠিকমতো সংসার খরচও হয়নি এর মাঝে আবার প্রতিমাসে দু’হাজার টাকা করে ঘর ভাড়া দিতে হয়।
আয়শা জানায়, চাঁদপুরেরর বিভিন্ন স্থানে সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্পে একটি ঘর পাওয়ার জন্য চাদপুর সদর উপজেলায় চারবার লিখিত ভাবে আবেদন জমা দেন । কিন্তু তিনি আজো সেই ঘর পাওয়ার কোন আশ্বাস পাননি। তার এমন কেউ নেই যে একটি ঘর পাওয়ার জন্য তাকে সহযোগিতা করবে।
প্রতিবন্ধী শিশুকে নিয়ে প্রতিদিনের ক্লান্ত দেহ নিয়ে ঘরে গিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার মতো আজো তার মাথা গোঁজার ঠাই হয়নি। আয়শা বেগমের মনের আশা আজো পূরণ হয়ে উঠেনি। বৃদ্ধ এ অসহায় নারী সমাজের বৃত্তবানদের কাছে একটু আশ্রয় চান। দিন শেষে ঘরে ফিরে একটু মাথা গোজার আশ্রয়।
তাই আয়শা বেগম চাঁদপুরের যে কোনো আশ্রয়ন প্রকল্পে একটি ঘর পাওয়ার আকুতি নিয়ে প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছেন ।
প্রতিবেদক- কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১ : ৫০ এএম, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ