শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও ভিক্ষাবৃত্তি না করে গ্রামের বাজারে ফুটপাতে পান সিগারেট বিক্রি করে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসারের হাল টেনে যাচ্ছেন প্রতিবন্ধী মো. লিটন গাজী। যদিও যে টাকায় একটি সংসারের খরচ চলেনা তবুও সে টাকায় কোন রকম চলছে তার সংসার তরী। ভাগ্যে জোটেনি ভালো অংকের প্রতিবন্ধী ভাতা।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের ঢালীর ঘাট বাজারে একটি ঔষধের দোকানের সামনে দেখা মিলে এ প্রতিবন্ধীর সাথে। সে ওই ঔষধের দোকানের সামনে ছোট্র একটি বাক্স নিয়ে পান সিগারেট বিক্রি করতে দেখা যায়।
তার সাথে কথা বলে জানা যায় চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণসাখুয়া গ্রামে তার জন্ম।
তিনি জানান যখন তার ৩ বছর বয়স তখন তিনি টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পিঠের অংশ কুজো হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে যান। একই সাথে তার দৃষ্টিশক্তিও নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে ঠিকমতো চোখে দেখতে পান না। তবুও লোক লজ্জার ভয়ে ভিক্ষা না করে কাজ করে সংসার চালানোর চেষ্টা করছেন।
লিটন গাজী বলেন প্রায় ১০/১২ বছর পূর্বে আমাদের বাড়ি ঘর নদী-গর্ভে বিলিন হয়ে যায় তার পর থেকে ঢালীরঘাট এলাকায় মামার বাড়িতে আশ্রয় নেন।
তিনি এর আগে প্রায় ২০/ ২২ বছর ধরে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন বেকারির মালা মাল নিয়ে ভ্যান গাড়ির সাথে থেকে দোকানে দোকানে মালামাল দেয়ার কাজ করতেন, তার বিনিময়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ টাকা করে পেতেন।
স্থানীয় গ্রাম্য চিকিৎসক নুরু মিয়ার সহযোগিতায় তার ফার্মেসীর সামনে মাসখানেক ধরে এই পান সিগারেট বিক্রি করছেন।
তার দাবি, এখানে প্রতিদিন দুই, আড়াই’শ টাকা করে বিক্রি হয়। তা দিয়ে কি আর সংসার চলে ? কারো সহযোগিতা পেলে হয়তো ভালো কোন ব্যবসা করে স্ত্রী, সন্তান নিয়ে চলতে পারতেন। তার ঘরে স্ত্রী ও হামিম নামে সাড়ে ৩ বছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
কোথাও হতে প্রতিবন্ধী ভাতা পান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লিটন গাজী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন ‘৮-৯ বছর ধরে লক্ষীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রতিমাসে ৬শ টাকা করে প্রতিবন্ধী ভাতা পাই। এছাড়া আর কারো কাছ থেকে কোন ধরণের সাহায্য সহযোগিতা কিংবা অন্য কোথা থেকে কোন ভাতা পাইনি।
যদি প্রশাসন অথবা কোন ব্যাক্তি সহযোগিতা করে তাহলে অন্য কোন ব্যবসা করে আমি আমার পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোভাবে চলতে পারবো।’
কবির হোসেন মিজি
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৬: ৫৫ পিএম, ১৪ মার্চ ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ