যশোরের সাতমাইল পাইকারি সবজি মোকামে প্রতি হাটে এক থেকে দেড় কোটি টাকার মুলা বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে শীতের আগাম সবজি মুলার ভালো দাম পেয়ে বেজায় খুশি এ অঞ্চলের কৃষক। বর্তমানে সাতমাইল সবজি বাজারে প্রতি হাটে এক থেকে দেড় কোটি টাকার মুলা বিক্রি হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা এসব মুলা কিনে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত আগস্টে দু’দফা ভারী বর্ষণে বেগুন, শিমসহ শীতকালীন সবজির গাছ মরে যায়। ওই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষিরা স্বল্প সময়ের ফসল মুলার আবাদ করেন। বাজারে অন্যান্য সবজির তেমন সরবরাহ না থাকায় মুলার ভালো দাম পাচ্ছেন তারা।
সপ্তাহের রোববার ও বৃহস্পতিবার সাতমাইলে এবং শনিবার ও মঙ্গলবার চূড়ামনকাঠিতে মুলার এ হাট বসে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সরেজমিন যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল সবজির হাটে গিয়ে দেখা যায়, শুধু মুলা আর মুলা। বিগত বছরগুলোতে এসময় আগাম জাতের শীতের সবজি হাটে উঠলেও এবার তা হয়নি। চাষিরা ক্ষেত থেকে শুধু মুলাই এনেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরাও এসেছেন হাটে।
আট মণ মুলা নিয়ে হাটে আসা সদর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেড় বিঘা জমিতে মুলার চাষ করেছি। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় ভালো হয়েছে। দামও ভালো। দেড় বিঘা জমিতে মুলা চাষ করতে আমার ১৪ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। আশা করছি, যে মুলা হবে তা বিক্রি করে আমার ৯০ হাজার টাকা লাভ হবে।’
মানিকদহ গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃষ্টিতে বেগুনের ক্ষেত নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আমি মুলার চাষ করি। ফলনের পাশাপাশি দামও ভালো। বৃষ্টিতে যে ক্ষতি হয়েছিল আশা করছি, মুলায় তা পুষিয়ে যাবে।’
হাটে মুলা কিনতে আসা ঝিনাইদহের বারোবাজার এলাকার ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান বলেন, তিনি গত ১২ দিন ধরে প্রতিদিন গড়ে ৬০ মণ মুলা কিনছেন। প্রথম দিকে ৩২/৩৩ টাকা কেজি দরে মুলা ক্রয় করেন। তবে, বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) হাটে ২৩ টাকা দরে মুলা কিনেছেন। এই মুলা তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ি এলাকায় সরবরাহ করবেন।
যশোরের সাতমাইল বাজার থেকে সবজি কিনতে আসা চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী ঝুনু মিয়া বলেন, ‘প্রতিদিন আমি চার ট্রাক সবজি কিনি। অন্যান্য সবজি বেশি না থাকায় শুধু মুলাই কিনছি। প্রথম দিকে ৩৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হলেও এখন কৃষকদের কাছ থেকে ২৫ টাকায় মুলা পাওয়া যাচ্ছে।’
সাতমাইল সবজি হাটের ইজারাদার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাজাহান আলী গাজী বলেন, ‘বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৩০ ট্রাক মুলা হাটে ক্রয় বিক্রয় হচ্ছে। এই হাট থেকে ৩০টি ট্রাকে প্রায় ১২ হাজার মণ মুলা দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। যার দাম এক কোটি ২০ লাখ টাকা। এছাড়া যশোরের অন্যান্য বাজার থেকেও মুলা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ হয়।’
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০০ পিএম, ২৩ জুলাই ২০১৬, রোববার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur