Home / চাঁদপুর / ‘প্রতিকূলতা পদদলিত করেও দেশকে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা’
প্রতিকূলতা পদদলিত করেও দেশকে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা

‘প্রতিকূলতা পদদলিত করেও দেশকে এগিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা’

চাঁদপুরে ৪ দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবির বিন আনোয়ার

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক ও একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম প্রকল্প পরিচালক কবির বিন আনোয়ার বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশ সকল ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশকে খাদ্য উৎপাদ বৃদ্ধি, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। আর এ জন্যই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প ভিশন-২০২১ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এই রূপকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে তথ্য-প্রযুক্তি নির্ভর জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চাাঁদপুর স্টেডিয়াম প্যাভিলিয়নে ৪ দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, এখন ভাষার মাস চলছে। এই মাসেই আমরা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পেয়েছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাষা আন্দলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৪৭ সালে শুধুমাত্র ধর্মের কারণে ভারতবর্ষ দুটি ভাগে ভাগ হয়। তখন বাংলাদেশের উপর পাকিস্তানের কর্তৃত্ব চাপিয়ে দেয়া হয়। একজন জাতীয় নেতা তা মেনে নিলেও বঙ্গবন্ধু মেনে নেননি। জেনারেল জিন্নাহ স্বঘোষিত রাষ্ট্রনায়ক হয়ে ঘোষণা দিলেন, ‘উর্দুই হবে বাংলাদেশে রাষ্ট্রভাষা’। ওই সময় কিছু ছাত্র নেতা প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিলো ‘বাংলাই হবে এদেশের রাষ্ট্র ভাষা’। তখন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেন। এর জন্য তিনি জেলও খেটেছেন। এর পর অনেক সংগ্রাম, তারপর ৫২ ভাষা আন্দোলনের হাত ধরে ১৯৭১ সালে ৯ মাসের সংগ্রামের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ স্বীকৃতি পায়।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশকে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু যখন নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন দেশীয় এবং আর্ন্তজাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে মহান এই নেতাকে হত্যা করা হয়। তারপর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সন্ত্রাসী, টাউট-বাটপার ঢুকে পরে। এরপরে নানা উত্থান-পতনের পরে বর্তমানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে। জাতীর পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যখন এগিয়ে চলতে লাগলো তখন আবারো বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্টিত করার জন্য একটি দল উঠে পরে লাগলো। তারা স্বাধীন দেশে আগুন সন্ত্রাস শুরু করলো। কিন্তু নানা প্রতিকূলতা পদদলিত করে বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পরে বাংলাদেশের জন্য একটি লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেন। আর সেটাই হলো রূপকল্প ভিশন ২০২১। এজন্যই তথ্য এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সরকার কাজ শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন ভিশন ২১ সফল করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে তরুণ উদ্যোক্তা গড়ে তেলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ধর্মান্ধতার হাত থেকে নারীকে মুক্তি দিয়ে তাদেরকেও এই কাজের সাথে একাত্মতা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। আজকে ডিজিটাল কোনো স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তবতা।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুস সবুর মন্ডললের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধরণ সম্পাদক আবু নঈম পটোয়ারী দুলাল।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য তিনি নির্বাচনে ইশতেহার দিয়েছেন। আর এতে যিনি অগ্রনি ভূমিকা রেখেছেন তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মহাপরিচালক ও একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রগ্রাম প্রকল্প পরিচালক ও কবির বিন আনোয়ার। ১৯৮৬ সাল থেকে স্যারের সাথে আমার পরিচয়। তিনি একজন অত্যন্ত সৎ এবং আদর্শবান মানুষ। ওনাকে আমি একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবে জানি। বাংলাদেশে ২০১০ সালের পরে তথ্য-প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে তাতে কবির বিন আনোয়ার ‘স্যারে’র অংশগ্রহণ রয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও মেলা উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মুহাম্মদ লুৎফর রহমান।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আলম ও জেলা কালচারাল অফিসার আবু সালেহ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এএসএম দেলওয়ার হোসেন, সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এম এম মতিন মিয়া, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা. সৈয়দা বদরুন্নাহার, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডষ্ট্রির সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি বিএম হান্নান ,চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ইকরাম চৌধুরী, গোলাম কিবরিয়া জীবন, শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীন, পুরাণবাজার কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক দেলোয়ার আহমেদ, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি গোলাম মোস্তফা বাবু প্রমুখ।

অতিথিদের বক্তব্য শেষে মেলায় অংশ নেয়া স্টলগুলোর মধ্যে ৮টি ক্যটাগরিতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। সব শেষে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট|| আপডেট: ১০:০৪ অপরাহ্ন, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বৃহস্পতিবার

এমআরআর