করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান, অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার অভিযোগে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
১৫ জুলাই বুধবার সাতক্ষীরা জেলার দেবহাটার রামগতি সীমান্ত এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্রসহ মো.সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সাহেদ ভারতে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিল। সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কোমরপুর গ্রামের লবঙ্গবতী নদী তীর সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৫.০০ থেকে ৫.৩০ এর দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগেও একবার একই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়েছিলো। সকাল নয়টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় আনা হবে।
এর আগে রিজেন্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ পারভেজকে গ্রেফতার করে র্যাব। মঙ্গলবার বিকালে গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সরকারের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে টাকার বিনিময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের নমুনা সংগ্রহ করা এবং ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগ ৬ জুলাই র্যাব রিজেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালায়। পরদিন উত্তরা পশ্চিম থানায় র্যাব বাদী হয়ে মো. সাহেদকে এক নম্বর আসামি করে মামলা করে।
সেই মামলায় ৯ দিন পলাতক থাকার পর গ্রেফতার হলেন মো. সাহেদ।
সাহেদ সম্পর্কে যা বলেছেন অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ম্যাজিস্ট্রেট
রিজেন্ট হাসপাতালের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকারী র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, ‘করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে আসা এবং বাড়িতে থাকা রোগীদের করোনার নমুনা সংগ্রহ করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করতো রিজেন্ট হাসপাতাল। এছাড়াও সরকার থেকে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ টেস্ট করার অনুমতি নিয়ে রিপোর্টপ্রতি সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার করে আদায় করতো তারা।
এভাবে জনগণের সাথে প্রতারণা করে মোট ৩ কোটি টাকার হাতিয়ে নিয়ে রিজেন্ট হাসপাতাল। এই সমস্ত অপরাধ ও টাকার নিয়ন্ত্রণ চেয়ারম্যান সাহেব (রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহেদ) নিজে করতো।’
তিনি বলেন, ‘অনিয়ম, অপরাধ ও প্রতারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো চেয়ারম্যান নিজেই ডিল করেছে, অন্যান্য কয়েকজন কর্মীও ছিল। চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হবে, জড়িত সবাইকে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।’
রিজেন্ট ও সাহেদের কুকর্ম বাংলাদেশকে কলঙ্কিত করেছে
ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, পরীক্ষার নামে ভুয়া রিপোর্ট দিয়ে পৃথিবীর অন্য কোন দেশ এই ইতিহাস তৈরি করেছে বলে আমার জানা নেই। আমার ধারণা একমাত্র বাংলাদেশেই এই সমস্ত কিছু লোক টেস্টের নামে আমাদের দেশকে কলঙ্কিত করেছে।আমরা আশা করছি এই অপরাধের কারণে তাদের মারাত্মক শাস্তি হবে।
আমরা চাই না এই কোভিড-১৯ নিয়ে কেউ কোন প্রতারণার আশ্রয় নিক। আমরা এই অপরাধের সাথে এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শাহেদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসুদসহ বেশকিছু কর্মকর্তা জড়িত রয়েছেন। একারণে আমরা ৮ জনকে আটক করেছি। তাদেরসহ জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নিয়মিত ধারায় মামলা করা হবে। তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
বার্তা কক্ষ, ১৫ জুলাই ২০২০