Home / সারাদেশ / প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী শচীন দেববর্মণের বাড়ীটি হতে পারে ঐতিহ্যের স্মারক
সংগীত

প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী শচীন দেববর্মণের বাড়ীটি হতে পারে ঐতিহ্যের স্মারক

প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী শচীন দেববর্মণের পৈত্রিক বাড়ীটি পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) ও সরকারের যুগ্ম-সচিব মুহাম্মদ আনোয়ার পাশা ।

বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নগরীর উত্তর চর্থায় অবস্থিত শিল্পী শচীন দেববর্মণের পৈত্রিক বাড়ীটি আকস্মিক পরিদর্শনে আসেন তিনি।

এসময় কুমিল্লাজেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক অপর্ণা বৈদ্য, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপেজলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মৌসুমী আক্তার, ঐতিহ্য কুমিল্লার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, চট্টগ্রামের বিশিষ্ট উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী রাজিব দাসসহ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় তিনি বাড়ীর ভেতরের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বলেন, শচীন দেববর্মণ উপমহাদেশের উজ্জ্বল সংগীত নক্ষত্র। তাঁর স্মৃতিধন্য কুমিল্লার এই বাড়ীটি এক সময় মুরগীর খামার হিসেবে পরিচিত ছিলো। প্রশাসনিক উদ্যোগে এটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আশা করছি জেলা প্রশাসন, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এখানে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। প্রখ্যাত শিল্পী শচীন দেববর্মণের এই বাড়ীটিকে ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে গড়েতোলা এবং শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি ও সংগীতের বিকাশে এটি ভবিষ্যতে বৃহত্তর কুমিল্লার প্রাণকেন্দ্র এবং বাংলাদেশের একটি পীঠস্থান হয়ে উঠবে। তিনি বলেন,জেলা প্রশাসন এই বাড়ীটি নিয়ে কাজ করছেন। বাড়ীটির রেকর্ড পরিবর্তন করে যথাযথ সংরক্ষণে জেলা প্রশাসন এবং প্রতœতত্ত্ব বিভাগকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার অফিস থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলেও তিনি জানান।

সংগীত শিল্পী শচীন দেববর্মণ ১৯০৬ সালের পহেলা অক্টোবর কুমিল্লার চর্থায় ত্রিপুরার রাজ পরিবারের এই বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে শচীন ভারতের বোম্বেতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এর পর দীর্ঘ দিন পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো এই বাড়ীটি। বাড়ীর একটি বড় অংশে সরকারী হাঁস-মুরগীর খামার তৈরীকরে পাকিস্থান সরকার। ঐতিহাসিক এই বাড়ীটি হাঁস-মুরগীর খামার মুক্ত করে এটিকে কালচারাল কমপ্লেক্সে রূপান্তরে ঐতিহ্য কুমিল্লাসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সংস্কৃতিকর্মীদের দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছিলো। এ প্রেক্ষিতে ২০১৪ সালে মাছরাঙা টেলিভিশনের একটি প্রতিবেদন প্রচার হলে এটি নজরে আসে কর্তপক্ষের। তৎকালীন জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, হাসানুজ্জামান কল্লোল এর উদ্যোগে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন বাড়ীর একাংশ হাস-মুরগীর খামার মুক্ত করে সংস্কার করে। ওই বছরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন। পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসক জাহাংগীর আলম ও জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর এখানে শচীন মেলা চালু করেন।

শিল্পী শচীন দেববর্মণ ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে ভারতের মোম্বাইয়ে মারা যান।

প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩