Home / জাতীয় / রাজনীতি / পৌরসভা নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় শত বাধার মুখেও মাঠে থাকবে বিএনপি
পৌরসভা নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় শত বাধার মুখেও মাঠে থাকবে বিএনপি

পৌরসভা নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় শত বাধার মুখেও মাঠে থাকবে বিএনপি

পৌরসভা নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় শত বাধার মুখেও মাঠে থাকাতে চায় বিএনপি।

দলটির দাবি, পৌর নির্বাচন গায়ের জোরে নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীনরা। তাই জনগণের ইচ্ছার তোয়াক্কা করছে না। নির্বাচনী এলাকাগুলোতে আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িকসহ সংঘাত-সন্ত্রাসের বিভীষিকা নামিয়ে আনা হয়েছে। গুম, খুন, নৃশংসভাবে ক্রসফায়ারসহ সকল বিচারবহির্ভূত হত্যার দৃশ্য জমে উঠেছে প্রতিদিন। এতে আশঙ্কা আরও বাড়ছে।

এ সবের মধ্যও গত কয়েকদিন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটান। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন ধানের শীষ প্রতীকে। এর মধ্যে ঢাকার সাভার, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, যশোর, মাগুরা, কুমিল্লাসহ বেশকিছু এলাকায় প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা। এর মধ্যে কয়েকটি পৌর নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধার মুখে পড়েন। দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এমনটাই জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘হামলা হলেও আমাদের প্রচারণা থেমে নেই। গতকাল (সোমবার) কুমিল্লার চান্দিনায় হামলা হয়েছে। তারপরও আমরা বসে নেই। পরে বরুড়া ও লাকসামে প্রচারণা চালিয়েছি। আমরা মাঠে থাকব, এখনো আছি। এটা সত্য আমাদের ওপর হামলা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য বড় শক্তি প্রশাসন, ওইভাবে কারোই সহযোগিতা পাচ্ছি না, সংকটে পড়েছি। আমরা চেষ্টা করব জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে পারে। আর যদি জোর করে আগেই ব্যালট ছিঁড়ে নেয় তাহলে আর কিছুই করার নেই। তাই আমরা নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে থেকে উঠোন বৈঠক করছি, যেভাবে পারছি জনগণকে বিষয়গুলো অবহিত করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ওপর ককটেল ও বোমা ফাটানো হচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করলে উল্টো আমাদের মামলা দেওয়া হচ্ছে। আমরা তো আর পাল্টা জবাব দিতে পারি না। এমন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে চাই।’

সোমবার কুমিল্লার চান্দিনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান এবং বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও সাবেক হুইপ জয়নাল আবদীন ফারুক ধানের শীষের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে সভা করার ককটেল বিস্ফোরণের ঘটানো হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা এর সঙ্গে জড়িত। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া এবং কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনে প্রচারণার সময় বাধার মুখে পড়েন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। আওয়ামী লীগ সমর্থিতরা এ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। হামলায় প্রায় ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হন। পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা হলেও পুলিশ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি— দলটির দাবি।

হামলায় আলতাফ হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। হামলাকারীরা মাইক্রোবাসের সামনের কাচ ভেঙে ফেলে।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী জানান, ‘সরকার বলেছিল সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করবে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এবং তার পক্ষে দলের নেতৃবৃন্দ সমানভাবে নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবে। কিন্তু যেভাবে আমাদের (বিএনপি নেতারা) ওপর হামলা চালানো হল, তাতে মনে হয়েছে পৌর নির্বাচন হবে শুধুই প্রহসনমূলক।’

নির্বাচনের আগে ‘সন্ত্রাসী’ হামলায় নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ হবে কিনা— তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

এ হামলার জন্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিপুল চন্দ্র হাওলাদারের সমর্থকদের দায়ী করে এর জন্য তীব্র নিন্দা জানান তিনি।

কুমিল্লায় মঙ্গলবার আবারও বাধা মুখে পড়েন বিএনপি নেতারা। জেলার চান্দিনায় পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষের জনসংযোগের সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা জয়নাল আবদিন ফারুকের ওপর হামলা চালায়।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নাল আবদিন ফারুক মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, ‘আমি সকাল থেকে কয়েকটি এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছি। বেলা ১২টার দিকে চান্দিনা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তুলাতুলি এলাকায় প্রচারণা চালানোর সময় আমাদের ওপর হামলা হয়। হামলাকারীরা ৮টি মোটরসাইকেল নিয়ে আমাদের জনসংযোগে বাধা দেয়। পিস্তল উঁচিয়ে আমাকে হুমকি দেয়, বলতে থাকে মাঠে নামছ কেন, কোনো লাভ হবে না। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হলে প্রায় ১ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে আসেন তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি সবাইকে চিনি না। গ্রামবাসী বলেছে এরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর লোক।’

‘এরা (আওয়ামী লীগ সমর্থিত) আমাদের মাঠে থাকতে দিবে না। নানাভাবে বাধা দিবে। তারপরও আমরা মাঠে থাকার চেষ্টা করব,’ বলেন ফারুক।

নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী আগামী ৩০ ডিসেম্বর দলীয় প্রতীকে প্রথমবারের মতো স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ছাড়াও দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থী দিয়েছে।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৯:৫৪ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার

এমআরআর