চাঁদপুরে পেঁয়াজ-রসুন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার মে.টন

চাঁদপুরে চলতি রবি মৌসুমে ২০২৪-২০২৫ জেলার সব ক’টি উপজেলায় পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার মে.টন এবং চাষাবাদ ১ হাজার ১শ ৪০ হেক্টর জমি। তবে সবচেয়ে বেশি চাষাবাদ হচ্ছে হাইমচর চরাঞ্চলগুলো এর চাষাবাদ ব্যাপক। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি চাঁদপুরের আলোকে এ তথ্য জানা গেছে। এবার সব উপজেলায় পেঁয়াজ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৬ হাজার ৭শ ৫০ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭শ ৫০ হেক্টর। এর মধ্যে রসুনের উৎপাদন লক্ষ্য ৩ হাজার ৩শ ১৫ মে.টন এবং চাষাবাদ ৩শ ৯০ হেক্টর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি চাঁদপুরের ২০২৪-’২৫ এর বার্ষিক মৌসুমি রবি ফসলের আবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর সদরে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২ হাজার ১শ ৬৮ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২শ ৪৫ হেক্টর। মতলব উত্তরে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ১ হাজার ২শ ৮৩ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১শ ৪৫ হেক্টর। মতলব দক্ষিণে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ৪শ ৯০ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪৫ হেক্টর। হাজীগঞ্জে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৯শ ৭৩ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১শ ১০ হেক্টর। শাহরাস্তি পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১শ ১৫ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২৫ হেক্টর।

কচুয়ায় পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১শ ৭৫ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০ হেক্টর। ফরিদগঞ্জের পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৬শ ৫০ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৮০ হেক্টর। হাইমচরে পেঁয়াজ-রসুনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৪শ ৫ মে.টন এবং চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪শ ৬০ হেক্টর।

২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৪% রেয়াতি সুদে ডাল, তেল মসলা ও ভূট্টা চাষাবাদে চাঁদপুরের ব্যাংকগুলো প্রায় ৯৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এবং কৃষকদের ঋণপ্রদান কাজ চলমান বরে জানা গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর চাঁদপুরে উৎপাদন বাড়াতে ৪০ হাজার ৯ শ ১০ মে.টন সার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মরত কৃষি কর্মকর্তা গেলো সপ্তাহের দুপুরে জানিয়েছেন। এর মধ্যে ইউরিয়া সার ২৫ হাজার ৫শ ৮৮ মে.টন, টিএসপি ৬ হাজার ৮ শ ৬৪ মে.টন,ডিইপি ১০ হাজার ৭শ ৭১ মে.টন এবং অন্যান্য ৭ হাজার ৪শ ৯৭ মে.টন সার সরকারিভাবে চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলা সার কমিটির অনুমতিতে ও সরকারিভাবে নিয়োগকৃত সার ডিলারেদের মাধ্যমে জেলার সকল হাট-বাজারে এ সার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে কৃষি অধিদপ্তরের ঐ কর্মকর্তা জানান। এদিকে চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় চলতি ২০২৪-২৫ বছরের রবি মৌসুমে ২০ হাজার কৃষককে ২ কেজি করে বোরো ধানসহ অন্যান্য বীজ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। জেলার সব উপজেলার ১ শ ৫ জন ডিলারের মাধ্যমে এসব বীজ স্ব স্ব উপজেলার হাট-বাজারে ইতোমধ্যেই পৌঁছানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে ।

কৃষিবিদ মোবারক হোসেন জানান ,‘উৎপাদনে পেঁয়াজ-রসুন চাষাবাদে কৃষকগণ জমি প্রস্তুত করতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকলে সময়মত চাষাবাদ করা হলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।উৎপাদিত পেঁয়াজ-রসুন বাজারে আসামাত্র বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আমদানি নির্ভরশীলতা কমে আসবে।’ চাঁদপুর জেলার হাইমচর এর বাবুরচর,মধ্যচর, ঈশানবালা ও মাঝির বাজার,চাঁদপুর সদরের ফতেজঙ্গপুর, রাজরাজেশ্বর, জাহাজমারা, মতলব উত্তর বোড়োচর,চর ইলিয়াড,সবজি কান্দি প্রভৃতি এলাকার চরাঞ্চলের কৃষকগণ ব্যাপকহারে পেঁয়াজ-রসুনের চাষাবাদ করে থাকে। এছাড়াও চাঁদপুর জেলার নদীভাঙ্গন ও নদী তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোতে নদীর তীরে পেঁয়াজ-রসুনের চাষাবাদ হয়ে থাকে।

এগুলোর মধ্যে রয়েছে-হাইমচরের চরভৈরবি,চাঁদপুর সদরের ইব্রাহিমপুর,রাজরাজেশ্বর, বিষ্ণুপুর এবং মতলব দক্ষিণ সবজিকান্দি ও উত্তরের মোহনপুর, জহিরাবাদ ও একলাশপুর প্রভৃতি ইউনিয়নের নদীরতীরে ও একটু ভেতরে ব্যাপক হারে পেঁয়াজ-রসুন নিজ উদ্যোগেই কৃষকগণ চাষাবাদ করে থাকে বলে জানা যায়।

আবদুল গনি
চাঁদপুর টাইমস
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
এজি

Share