নরওয়ের উত্তর মেরু এলাকার দ্বীপপুঞ্জ এসভালবার্ডের একটি পাহাড় কেটে কয়েক বছর আগে তৈরি করা হয়েছিল বীজ সংরক্ষণাগার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত বেলে পাথরের পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছিল সেই সংরক্ষণাগার। টেকটোনিক এক্টিভিটির অনুপস্থিতি এবং বরফাচ্ছাদিত অঞ্চল হওয়ার কারণেই মূলত এই জায়গাটিকে বেছে নেয়া হয়েছিল বীজ সংরক্ষণাগার বানানোর জন্য। ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনের পর থেকে এখন পর্যন্ত গত দশ বছরে দশ লক্ষাধিক প্রজাতির বিভিন্ন খাদ্যশস্য এবং বনজ উদ্ভিদের বীজ রাখা হয়েছে সেখানে। বীজ রাখার জন্য প্রতিবছর মাত্র দুইবার সংরক্ষণাগারটি খোলা হয়। এখানে বীজ রাখার অন্যতম উদ্দেশ্য পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত বীজ অক্ষত রাখা। প্রাকৃতিক কিংবা মানবসৃষ্ট কোন বিপর্যয়ই যেন নিঃশেষ না হয়ে যায় সেই বীজ।
প্রথম দিকে মূলত বিভিন্ন ধরনের খাদ্যশস্যের বীজই এখানে রাখা হতো। কিন্তু পর্যায়ক্রমে সেই তালিকায় যোগ হয়েছে বনজ উদ্ভিদের বীজ। ইতিমধ্যে এই সংরক্ষণাগারে জমা হয়ে গেছে দশ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪৬ প্রজাতির শস্য এবং বনজ উদ্ভিদের বীজ। সংরক্ষণাগারের তিনটি চেম্বারের একটি চেম্বার প্রায় পূর্ণ হয়ে গেছে। এর বেশিরভাগই গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য শস্যের বীজ। বীজগুলো রাখা হচ্ছে চার ভাঁজের বিশেষ এক ধরনের প্যাকেটে। এর ফলে এই প্যাকেটের মধ্যে ঢুকতে পারবে না আর্দ্রতা।
জলবায়ু পরিবর্তন কিংবা মানবসৃষ্ট কারণে কোন অঞ্চলের কোন খাদ্যশস্য কিংবা বনজ উদ্ভিদ বিলুপ্ত হয়ে সংরক্ষণাগারে রাখা বীজ থেকে নতুন করে ফিরিয়ে আনা হবে। এমনকি জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণেও যদি কোন অঞ্চলের খাদ্যশস্য নিঃশেষ হয়ে যায় কিংবা টিকে থাকতে ব্যর্থ হয় তাহলে গবেষণার মাধ্যমে সংরক্ষণাগারে থাকা ওই খাদ্যশস্যের বীজের জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে তা পরিবর্তিত জলবায়ু-সহিষ্ণু করে তোলার পরিকল্পনা গবেষকদের। এরই সবচেয়ে বড় দৃষ্টান্ত হতে যাচ্ছে যুদ্ধের কারণে সিরিয়া থেকে হারিয়ে যাওয়া অনেক প্রজাতি ফিরিয়ে আনতে সংরক্ষণাগারে রাখা বীজকে কাজে লাগানো। এর জন্য প্রায় ৯০ হাজার প্রজাতির বীজ সংরক্ষণাগার থেকে তোলার প্রক্রিয়া চলছে।( ইত্তেফাক)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ২: ০০ পি.এম ১০মার্চ,২০১৮শনিবার
কে এইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur