চাঁদপুর পুলিশ সুপার এসপি শামসুন্নাহার ২৪ শর্তে ৮ থেকে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাঁদপুর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা করার জন্যে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রস্তাব দিয়েছেন।
পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের এক চিঠিতে ২৬ তম মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা ২০১৭ উদযাপন এ তথ্য জানা যায়।
এখন চাঁদপুর জেলা প্রাশাসক সিদ্ধান্তের কতদিন মেলা চলবে এবং চাঁদপুর শহরের হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে থাকবে কিনা তা জানা যাবে।
যদিও ২০১৫ সালে জেলা প্রশাসক কার্যলয়ে সবশেষে রেজুলেশন মতে চাঁদপুর হাসান আলী মাঠে আর বিজয় মেলা হবে না। পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকেও হাসান আলী মাঠ পরিবর্তন করে অন্যত্র নির্ধারণ করার জন্যে অনুরোধ করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ থেকে দেয়া শর্তগুলো হলো :
১। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা অনুষ্ঠানে লক্ষ্যে মাঠ ব্যবহারের জন্য মাঠ কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। এবং অনুষ্ঠান স্থলের চতুর্দিকে অস্থায়ী ভাবে টিনের বেড়া দিয়ে নিরাপ্তত্তা বেস্টনী নির্মাণ করতে হবে।
২। মেলার দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকের চলাচলের মূল রাস্তা হতে ১২ ফুট মাঠ ছেড়ে দিয়ে মেলার বেষ্টনী তৈরি করতে হবে।
৩ মেলার গেইটে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ মেলা এলাকায় পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে।
৪। মেলার মূল প্রবেশ পথটি কমপক্ষে ৩০ ফুট হতে হবে। দর্শনার্থীদের প্রবেশ ও বাহিরের নিমিত্তে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে প্রবেশ ও বাহিরের পথ থাকতে হবে। প্রবেশ পথে হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর মেশিনের সাহায্যে দেহ তল্লাশির ব্যবস্থা করতে হবে।
৫। মেলায় আগত পুরুষ ও মহিলাদের জন্যে পৃথক পৃথক পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৬। অনুষ্ঠান স্থল এলাকায় পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক বাতিসহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট মোকাবেলার জন্যে জেনারেটরর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৭। মেলায় আগত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও শান্তি শৃংখলা রক্ষার্থে আয়োজক কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত সংখ্যা স্চ্চোসেবক বা নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ করে মাঠ ও আশ-পাশ এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চত করতে হবে। উক্ত সেচ্চাসেবক বা নিরাপত্তা কর্মীদের পরিচয় পত্র সরবারাহ করতে তাদের নামের তালিকা মেলা আরম্ভ হওয়ার আগে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় জমা দিতে হবে।
৮। মেলা শুরু হওয়ার পূর্বে মেলা পরিচালনা কমিটির সকল সদস্যের নাম-ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বার থানায় জমা দিতে হবে।
৯। মেলায় পুতুল নাচ, সার্কেস, যাত্রা, ভেরাইটিম শো, অশ্লীল ও জনগণের বিরক্তিকর কোনো কিছু প্রদর্শন করা যাবে না। তাছাড়া নাগরদোলা, হাউজিং , লাকী কুপন, কোনো প্রকার র্যাফেল ড্র , ফটকাবাজি, ভ্রাম্যামাণ কোনো পুতুল নাচ ও নাগরদোলা চলানো যাবে না।
১০। মেলার অবস্থানে ও অাশ-পাশের কোথাও অসামাজিক বা অপরাধমূলক কাজ যেমন, জুয়া, মদ, গাঁজা, অশ্লীল নাচ গানের আয়োজন করা যাবে না । মেলায় কোনো প্রকার মাদকদ্রব্য ক্রয় বিক্রয় ও সেবন করা যাবে না।
১১। বিজয় মেলার মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিষয় আলোচনা, দেশাত্ববোধক নাচ গান আবৃত্তি ইত্যাদি ব্যতিত অন্য কিছু চালানো যাবে না।
১২। মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলায় স্থাপিত স্টলগুলোতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত নিদর্শন সমূূহের সমাহার থাকতে হবে।
১৩ । মাঠের মাঝখানে দর্শনার্থীদের জন্য খোলা রাখতে হবে। কোনো স্টল ও নাগর দোলা থাকতে পারবে না।
১৪। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নীতির বিরুদ্ধে কোনো ধরণের উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করা এবং রাজনৈতিক ব্যাস্ট করা যাবে না।
১৫। নামাজ ও আযানের সময় মাইক বাজানো বন্ধ রাখতে হবে। শব্দ দুষণের মাধ্যমে জনসাধারণের বিরক্তি বা অসুবিধা সৃষ্টি করে মাইক বাজানো যাবে না। মাইকের হর্ণ মেলার অভ্যন্তরে রাখতে হবে।
১৬। স্কুলের কোনো কার্যক্রম থাকলে স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে মেলার কার্যক্রম চালাতে হবে।
১৭। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানে এমন কাজ করা হতে বিরত থাকতে হবে।
১৮। সরকারি বিধি-বিধান মেনে মেলার কার্যক্রম চালাতে হবে।
১৯। মেলার অভ্যন্তরে আয়োজক কর্তৃপক্ষের একটি অফিস রুম ও কন্ট্রোলরুম থাকতে হবে।
২০। মেলায় একটি পুলিশ ক্যাম্পের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
২১। প্রশাসন যো কোনো সময় মেলা বন্ধ করতে পারবে।
২২। মেলায় প্রাথমিক চিকিৎসা ক্যাম্প স্থাপন করতে হবে।
২৩। প্রতিদিন ৩ থেকে ১০ টার মধ্যে মেলার কার্যক্রম চলবে এবং নির্ধারিত আগামি ২৮-১২-১৭ তারিখে মেলার কার্যক্রম শেষ করতে হবে।
২৪। মেলায় আইন শৃংখলাজনিত পরিস্থিতি কিংবা শর্ত ভঙ্গের জন্যে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
এদিকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পুলিশ সুপারের কার্যালয় থোকে জেলা প্রাশাসকের কাছে মেলার অনুমতির জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন। এর এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্যে পুলিশ সুপারকে জেলা প্রশাসক থেকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ ০৭ : ০৩ পিএম, ২২ নভেম্বর, ২০১৭ বুধবার
ডিএইচ