জাতীয়

পুলিশ মহাপরিদর্শকের ৩০ দফা নির্দেশনা

করোনা মহামারীতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং মানবিক পুলিশিংয়ের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ৩০ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.বেনজীর আহমেদ।

তিনি বলেছেন, ‘করোনাভাইরাস প্রতিরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে লকডাউন করা হয়েছে। সঠিকভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে মানুষের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে।’দায়িত্ব গ্রহণের পর ১৮ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ সদর দফতর থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পুলিশের সব রেঞ্জ, মহানগর ও বিশেষায়িত ইউনিটের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন আইজিপি।

আইজিপি বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য এ সময় খোলা স্থানে অথবা ফুটপাথে বাজার বসাতে হবে। বাজারে একমুখী চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে,যাতে কমপক্ষে ২০ ফুট দূরত্ব বজায় থাকে। চায়ের দোকানে আড্ডা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে কেউ পণ্যের মজুদদারি অথবা মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রাখতে হবে। সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং ওএমএস নিয়ে কেউ যেন রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে না পারে, সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। বর্তমানে জেলা পুলিশের অনেক সক্ষমতা রয়েছে । এ সক্ষমতা কাজে লাগাতে হবে ।’

ড.বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘ফোর্সের কল্যাণে কাজ করতে হবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালনকালে কোনো পুলিশ সদস্য অসুস্থ হলে তার চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।’

মাদকের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে আর মাদক দেখতে চাই না। আমরা মাদকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।’

আইজিপি বলেন,‘ সাইবার অপরাধ, অর্থনৈতিক অপরাধ ইত্যাদি প্রযুক্তিনির্ভর অপরাধ বন্ধ করতে হবে। ভুয়া সংবাদ,গুজব বন্ধ করতে হবে। পুলিশ সদস্যদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমরা দুর্নীতিমুক্ত পুলিশ প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। কোনো পুলিশ সদস্য অবৈধ আয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে তাকে অবশ্যই বেরিয়ে আসতে হবে।’

টিম স্পিরিটের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশের কাজের মূল ভিত্তি হবে টিম স্পিরিট। এককভাবে নয়, পুলিশ সদস্যদেরকে টিমে কাজ করতে হবে।’

তিনি বলেন,‘ আমরা পুলিশকে প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক ও স্মার্ট পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।’

বাংলাদেশ পুলিশের ২ লাখ ১২ হাজার পুলিশ সদস্যের প্রত্যেককে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইজিপি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সবাইকে দেশের কল্যাণে এবং রাষ্ট্রের অগ্রগতি ও উন্নয়নে কাজ করতে হবে।’

আইজিপি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,জাতীয় চার নেতা,৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ বীরাঙ্গনাসহ মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা ব্যুরো চীফ , ১৯ এপ্রিল ২০২০
এজি

Share