শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি সিরিজ যেভাবে সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই পেরিয়ে গেছে, নিদাহাস ট্রফিতেও কি তাই হবে? থাইল্যান্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এই অলরাউন্ডারকে যে পরামর্শ দিয়েছেন, তাতে প্রশ্নটা উঠছেই। তাঁদের দেওয়া ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ৬ মার্চ থেকে কলম্বোয় অনুষ্ঠেয় ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের পুরোটাই সাকিবের মিস করার আশঙ্কা এখন।
এমনকি ৪ মার্চ দলের সঙ্গে শ্রীলঙ্কায় যেতে পারবেন কি না, তা নিয়েও সংশয়। গতকালই বাঁ হাতে চোটগ্রস্ত কনিষ্ঠাঙ্গুল থাইল্যান্ডের অস্থি বিশেষজ্ঞদের দেখিয়েছেন বাংলাদেশের টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। তাঁরা আজ থেকেই ফিজিওথেরাপি শুরু করতে বলে দিয়েছেন। সেটি শুরু করে আজই দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে সাকিবের। দেশে ফিরেও চালিয়ে যেতে হবে ফিজিওথেরাপি। পরবর্তী মূল্যায়নের আগে অন্তত এক সপ্তাহ ফিজিওথেরাপি নিতে হবে বলেই দলের সঙ্গে যাওয়া আপাতত অনিশ্চিত।
সেদিন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান নিদাহাস ট্রফির প্রথম দুই ম্যাচ মিস করতে পারেন বললেও এখন পুরো টুর্নামেন্ট খেলাও অনিশ্চিত করে দিয়েছে থাইল্যান্ডের বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ। সেটি জেনেছেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীও। কাল তিনি বলছিলেন, ‘সাকিবের খবর হচ্ছে কাল (আজ) সকালে ফিজিওথেরাপি করবে। একটি সেশন করেই ও দেশে ফিরে আসবে। দেশে ফিরেও ফিজিওথেরাপি চালিয়ে যেতে বলেছেন ওখানকার বিশেষজ্ঞরা।’
কিন্তু কত দিন? দেবাশীষের জবাব, ‘ওনারা বলেছেন ফিজিওথেরাপি চালিয়ে যেতে। যদি সপ্তাহখানেক ফিজিওথেরাপি করার পরও দেখা যায় কোনো উন্নতি হচ্ছে না, সে ক্ষেত্রে একটি সিদ্ধান্তে যেতে হবে। আর কী করা যায়? যদি দেখা যায় উন্নতি হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপিই চালিয়ে যেতে বলেছেন ওখানকার বিশেষজ্ঞরা।’ এখানেই সাকিবের নিদাহাস ট্রফিতে খেলা অনিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে আরো। কারণ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের বাইরে যাওয়ার ঝুঁকি নিশ্চয়ই নেওয়া হবে না। দেবাশীষও বলেছেন, ‘আপাতত ফিজিওথেরাপি চালিয়ে যাওয়ারই পরিকল্পনা। সপ্তাহখানেক চালিয়ে যাওয়ার পর উন্নতি হলেও সেটিই চালিয়ে যাব আমরা।’
ফিজিওথেরাপির প্রথম সপ্তাহ শেষ হতে না হতেই ৮ মার্চ নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ। পরবর্তী পর্যবেক্ষণের পর অন্য কোনো ব্যবস্থায় যেতে হলেও কিংবা উন্নতি হলে ফিজিওথেরাপি চালিয়ে গেলেও চিকিৎসার মধ্যেই থাকতে হবে সাকিবকে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসা চলার মধ্যে নিশ্চয়ই মাঠে নেমে পড়ার ঝুঁকি সাকিবও নেবেন না। তা ছাড়া এমন চোটের পর কোনো ধরনের ম্যাচ প্রস্তুতি ছাড়া নেমে পড়াও কতটা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে, প্রশ্ন আছে তা নিয়েও।
দেবাশীষ অবশ্য সাকিবের খেলা না খেলার ব্যাপারটি ছেড়ে দিচ্ছেন সময়ের হাতে, ‘এক সপ্তাহ পর যদি ভালো অনুভব করে, তাহলে হয়তো চেষ্টা করতেও পারে। আসলে পুরো ব্যাপারটিই নির্ভর করছে সাকিবের ওপর। যদি দেখা যায় ভালো হয়ে গেল বা আঙুলের ফোলা কমে গেল। আবার এ রকমও তো হতে পারে যে কিছুদিন ব্যাটিং না করে সে আত্মবিশ্বাস পাচ্ছে না। এই মুহূর্তে বলা কঠিন। আমরা মেডিক্যাল গাইডলাইন অনুসরণ করে যাব। সময়ই বলে দেবে।’
ব্যাপারটি যেহেতু এখন সময়ের হাতেই ছেড়ে দেওয়া, তখন নিশ্চিত করে বলারও কিছু নেই। এর পরও সাকিব দলের সঙ্গে কলম্বোয় যাবেন কি না, সে সিদ্ধান্ত দেবে বিসিবির শীর্ষমহল, ‘ওকে আসতে বলা হয়েছে সব কিছু বুঝে নেওয়ার জন্য। যতটুকু জানতে পেরেছি, এই ফিজিওথেরাপি বাংলাদেশেও করা যাবে। এমনও তো হতে পারে যে শ্রীলঙ্কায়ও সেটি করা সম্ভব। এখন দলের সঙ্গে সে যাবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন বিসিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।’ চোট পাওয়ার পর বিসিবির দেওয়া প্রথম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য বলা হয়েছিল, সাকিব শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট মিস করবেন। পরে পুরো টেস্ট সিরিজ তো বটেই, তাঁকে রেখে দল ঘোষণার পর খেলতে পারেননি টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। নিদাহাস ট্রফিতেও তাই হওয়ার শঙ্কা জাগিয়ে রেখেছে থাইল্যান্ডের বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ!
(প্রথম আলো)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১১: ১০ এ.এম ১মার্চ ২০১৮বৃহস্পতিবার।
এএস.