পুরুষের ছদ্মবেশে নিজের নারী-চেহারা ৪৩ বছর ধরে ঢেকে রেখেছিলেন মিশরের শিশা আবু দাউহ। যাতে নিজে রোজগার করে দু মুঠো খাবার তুলে দিতে পারেন মেয়ে এবং নাতিনাতনিদের মুখে।
পরনে মিশরীয় পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী জিলবাব। মাথায় পাগড়ি অথবা টুপি ‘তাকিয়াহ’। পায়ে সাদামাটা জুতো। মিশরের আর পাঁচটা পুরুষের থেকে কোন পার্থক্য নেই সাজপোশাকে। উত্তর মিশরের লাক্সার প্রদেশের বাসিন্দা শিশা। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হারান স্বামীকে। এরপর এক মেয়েকে নিয়ে অসীম দারিদ্রের মুখে পড়েন। বাড়িতে রোজগারের কেউ নেই। এদিকে স্থানীয় সামাজিক অনুশাসন মতে‚ একজন মেয়ে বাইরে বেরিয়ে রোজগার করতে পারবেন না।
শেষে অনাহার থেকে বাঁচতে পুরুষ সাজলেন শিশা। তখন আর তাকে বাধা দেওয়ার কেউ নেই। পুরুষ সেজেই সবরকম ভারী কাজ করতে লাগলেন শিশা। নির্বিচারে চলল ইট‚ সিমেন্ট বওয়া। অথবা রাস্তার ধারে বসে বুট পলিশ। কিংবা শুধুই ভিক্ষাবৃত্তি। এইভাবেই ক্ষুণ্ণিবৃত্তি সামলে মেয়ে হুডাকে বড় করলেন শিশা। বিয়ে দিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরে হুডা মায়ের কাছে ফিরে এলেন সন্তান সন্ততি-সহ। কারণ তাঁর স্বামী শয্যাশায়ী। রোজগার করতে পারে না। ফলে মেয়ের সঙ্গে নাতিনাতনিদেরও মুখে খাওয়ার তুলে দেওয়ার দায়িত্ব চাপল শিশার ঘাড়ে। ফলে আরও বেড়ে গেল তার পরিশ্রম।
এইভাবেই সংসারের জোয়াল ঘাড়ে করে কঠোর পরিশ্রমের মধ্যে দীর্ঘ ৪৩ টি বসন্ত পার করেছেন শিশা। অতঃপর সামনে এসেছে তার প্রকৃত পরিচয় এবং সংগ্রাম। মিশরের লাক্সার প্রদেশের প্রশাসন তাকে ‘আদর্শ মা’-এর সম্মানে সম্মানিত করেছে।
শিশা এখনও লাক্সার স্টেশনের পাশে বসে জুতো পালিশ করেন। পরনে সেই পুরুষ-পোশাক। এতেই স্বচ্ছন্দ তিনি। এই সাজে মহিলাদের জন্য ইসলামিক পোশাক বিধিও তিনি রক্ষা করতে পেরেছেন। আবার নিজের সম্ভ্রমও বাঁচাতে পেরেছেন পুরুষ-নজর থেকে।
তবে একটা বদল এসেছে। এখন ৬৪ বছর বয়সী শিশার জন্য জুতো পালিশের বাক্সটি বয়ে নিয়ে যান তার মেয়ে হুডা। সূত্র: ইন্টারনেট।
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৩ : ৩০ পিএম, ০৯ মার্চ ২০১৭, বৃহস্পতিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur