অনলাইন নিউজ চাঁদপুর টাইমসে গত ৯ নভেম্বর ‘মতলব ডিগ্রি কলেজে দু’শিক্ষকের ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’ শিরোনামে সংবাদ সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়েছে।
পরীক্ষা কর্তৃপক্ষ ভূগোল ব্যবহারিক পরীক্ষা বাতিল করে দিয়ে শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) সকালে পুণরায় পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন। পরীক্ষার সময় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ ফরিদুল আলম কেন্দ্র পরির্দশন করেন।
শুক্রবার মতলব ডিগ্রি কলেজে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট বিষয়ের এক্সটারনাল চাঁদপুর পুরাণ বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক রতন কুৃমার কর্মকারের উপস্থিতিতে ছাত্র ছাত্রীদের ব্যাবহারিক পরীক্ষা নিচ্ছেন এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ ফরিদুল আলম কেন্দ্র পরিদর্শন করছেন।
এ ব্যপারে এক্সটারনাল চাঁদপুর পুরাণ বাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক রতন কুমার চাঁদপুর টাইমসকে কর্মকার বলেন, বিভিন্ন কারণে আগের পরীক্ষা বাতিল করেছি এবং আজ যথাযথ নিয়মে পরীক্ষা নিচ্ছি । আগের পরীক্ষা সম্পর্কে আমি কিছুই জানতাম না। যদি টাকা পয়সা নিয়ে থাকে তাহলে তা ফেরত দিতে বলেছি।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমিল্লা অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক মোহাম্মদ ফরিদুল আলম চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘উক্ত কেন্দ্রের ভুগোলের প্রর্দশক অশোক কুমার রায়ে অভিযোগ পত্রের ভিত্তিতে এবং পত্র পত্রিকায় লেখালেখির কারণে আমি এ কেন্দ্র পরিদর্শনে এসেছি । আজকের পরীক্ষা ও পুর্বের পরীক্ষার কাগজ পত্রের সাথে মিলিয়ে দেখবো। কিন্তু আজ ব্যাবহারিক পরীক্ষার খাতা কোন পরীক্ষার্থী দেখাতে পারেনি। এছাড়া অন্যান্য অভিযোগ ও খতিয়ে দেখছি। অনিয়মগুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’
পরীক্ষার্থীরা জানান, ‘আমরা ব্যবহারিক পরীক্ষার খাতা ম্যাডামের কাছে জমা দিয়েছি। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায় ওই ম্যাডাম পরীক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।’
কেন্দ্র সুত্রে জানা যায় এ কেন্দ্রে ১ম বর্ষের ৬৬জন ও ২য় বর্ষের ৪০জন মিলিয়ে ১০৬ পরীক্ষার্থী থাকলেও এ পরীক্ষায় ৩৫জন শিক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি’র প্রোগ্রামের মতলব ডিগ্রি কলেজ টিউটোরিয়াল কেন্দ্রের ভূগোল বিষয়ের টিউটরদের বিরুদ্ধে ক্লাস ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় অনিয়ম, দূর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়টির ওপেন স্কুলের ডীন বরাবর একটি অভিযোগ পত্র দিয়েছেন একই বিভাগের প্রর্দশক।
উক্ত কলেজের ভুগোলের প্রর্দশক অশোক কুমার রায় অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, মতলব ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ভুগোল বিষয়ের তত্ত্বীয় ক্লাস ও ব্যবহারিক পরীক্ষা নিয়ে প্রথম থেকে অদ্যাবধি ব্যাপক অনিয়ম, দূর্নীতি ও চাঁদাবাজি হয়ে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিউটর হলেন শিক্ষক জি এম হাবিব খান কিন্তু তিনি কোন দিনই ক্লাস নেন না , অথচ বছরে পর বছর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঠিকই নিয়মিত বেতনাদি নিয়ে থাকেন।
এ ছাড়া একই বিষয়ের অন্য শিক্ষক ফেরদাউস আরা বেগম অন্যান্য বছরের মতো দাপট খাটিয়ে নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে অর্থের বিনিময়ে এবারের পরীক্ষা আরম্ব করেন এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ( ১ম বর্ষের ৬৬জন ও ২য় বর্ষের ৪০জন মোট ১০৬) কাছ থেকে ৩শত টাকা করে আদায় করেন। টাকা দিলে ব্যবহারিক পরীক্ষার খাতা না আনলেও চলে এমনি পরিবেশ তিনি সৃষ্টি করেন।
এ সংক্রান্ত আগের প্রতিবেদনটি দেখুন-মতলব ডিগ্রি কলেজে দু’শিক্ষকের ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০০ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৬, শনিবার
ডিএইচ