সারা দেশে ৭ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা

চলতি মৌসুমে (২০২২-২০২৩) সারা দেশে ৭ লাখ ৪৫ হাজার হেক্টরে পাট ও পাটসদৃশ তন্তু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

পাট উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৬ বেল। ইতিমধ্যে দেশব্যাপী পাট চাষ শুরু হয়ে গেছে। বৃষ্টির অভাবে কোনো কোনো এলাকায় চাষ ব্যাহত হচ্ছে। চাষিরা সেচ দিয়ে বীজ বপন করছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ঢাকার খামারবাড়ির প্রধান কার্যালয় সূত্রে জানা যায়,এবার দেশি জাতের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টরে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৯ দশমিক ২০ বেল হিসাবে দেশি জাতের পাট উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ বেল।

তোষা পাটের চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ৬ লাখ ৭০ হাজার হেক্টরে। আর তোষা পাট উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে হেক্টর প্রতি গড় ফলন ১১ দশমিক ৭৭ বেল। এই হিসাবে ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার ৯৩৪ বেল পাট উৎপাদন হবে।

প্রতীকী

পাটসদৃশ তন্তু মেস্তা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ২০ হাজার ১৮০ হেক্টরে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৮ দশমিক ১০ বেল হিসাবে মেস্তার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৮ বেল। কেনাফ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ২৪ হাজার ৮২০ হেক্টরে। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৯ দশমিক ২৩ বেল হিসাবে কেনাফের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ১০৫ বেল।

গত কয়েক বছর পাটের দাম ভালো পাওয়ায় চাষিরা এবার পাট চাষে বেশি ঝুঁকেছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বৈরী আবহাওয়া। সাধারণত বৃষ্টির ওপর নির্ভর করে পাট চাষ হয়ে থাকে। বৃষ্টি টান দেয়ায় চাষিরা সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছেন। এতে তাদের চাষের খরচ বেশি হবে। আবার অনেক চাষি বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছেন। এতে চাষ নাবি হবে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান। নাবি পাট কেটে রোপা আমন চাষের সময় থাকবে না। যশোর ও ফরিদপুর অঞ্চলে বৃষ্টির অভাবে পাট চাষ ব্যাহত হচ্ছে। অনেক চাষি পাটবীজ বুনতে পারেননি।

এ বছর সেচ দিয়ে দেড় বিঘায় চাষ করেছেন। ডিজেলের দাম চড়ে যাওয়ায় সেচের খরচ বেশি পড়ছে। গত মৌসুমে ২ হাজার ৯০০ টাকা মন দরে পাট বিক্রি করেছিলেন।

বিজুলিয়া গ্রামের চাষি বাচ্চু মোল্লা বলেন,গত বছর বৈরী আবহাওয়ায় পাটের ক্ষতি হয়েছিল। এবার পাঁচ বিঘায় পাট চাষ করবেন। ইতিমধ্যে দেড় বিঘায় চাষ করেছেন। সাড়ে ৩ বিঘায় চাষ বাকি আছে। বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছেন।

দেশের অন্যতম প্রধান পাট উত্পাদনকারী জেলা হচ্ছে ফরিদপুর। এ জেলায় এবার ৮৬ হাজার ১৮৫ হেক্টরে পাট চাষের রক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফরিদপুরের উপপরিচালক ড.হজরত আলী জানান, ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৬০ % জমিতে পাট চাষ হয়ে গেছে। বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা সেচ দিয়ে পাটবীজ বপন করছেন।

ময়মনসিংহ জেলায়ও পাটের চাষ ভালো হয়। এবার এ জেলায় ৫ হাজার ২৮৮ হেক্টরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ময়মনসিংহ জেলার উপ-পরিচালক মো. মতিনুজ্জামান বলেন, চাষিরা বৃষ্টির জন্য পাটবীজ বপনে বিলম্ব করছেন। তবে কিছু কিছু চাষি স্বল্প পরিমাণ জমিতে বীজ বপন করেছেন। গত মৌসুমে পাট ওঠার পর প্রতি মণ পাট আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হয়। এরপর দাম চড়ে ছিল। বর্তমানে ফরিদপুর,মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলায় প্রতি মণ পাট ২ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে কেনাবেচা হচ্ছে বলে শৈলকুপার বাজারের পাট ব্যবসায়ীরা জানান।

১০ এপ্রিল ২০২২
এজি

Share