পাটের বীজ থেকে অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করলেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা

ঢাবির অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম বলেন,এ অ্যান্টিবায়োটিকগুলো বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া যেগুলোর বিরুদ্ধে ওষুধ কার্যকর নয় তেমন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে ।’

পাট বীজে পাওয়া যায় এমন একটি বিরল প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া থেকে নতুন একটি অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশি বিজ্ঞানীরা।
গত ২৭ মে “সায়েন্টিফিক রিপোর্টস” নামের একটি সাময়িকীতে এক সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

বিজ্ঞানীদের এ দলটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) একাধিক অধ্যাপক, কিছু শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশ বৈজ্ঞানিক ও শিল্প গবেষণা কাউন্সিলের সদস্য রয়েছেন।

তারা হলেন- ড.এম আফতাব উদ্দিন,শাম্মী আক্তার, মাহবুবা ফেরদৌস,বদরুল হায়দার, আল আমিন,এএইচএম শফিউল ইসলাম মোল্লা, ড.হাসিনা খান ও ড.মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আণবিক জীববিজ্ঞান পরীক্ষাগারে তিন বছর ধরে চলা এ গবেষণার জিনোম সিকোয়েন্সিং অনুসারে,ব্যাকটেরিয়াটি থেকে কমপক্ষে পাঁচটি অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করা যেতে পারে যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সক্ষম।

ঢাবির প্রাণরসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন,”এ অ্যান্টিবায়োটিকগুলো বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া যেগুলোর বিরুদ্ধে ওষুধ কার্যকর নয় তেমন রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা রাখে।”

বৈজ্ঞানিক দলের জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং ঢাবির প্রাণরসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড.হাসিনা খান বলেন,“যখন আমরা জিনোম সিকোয়েন্সিং শুরু করি তখনও কোনো লক্ষ্য স্থির করিনি। অনেক অণুজীবই পাটের মতো গাছগুলোতে বাস করে তাই গবেষণায় আমরা কী পাই সেটা নিশ্চিত ছিলাম না।”

তিনি বলেন,“এ ব্যাকটেরিয়া জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পরে আমরা দেখতে পাই এর মধ্যে এমন একটি জিন রয়েছে যা অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন করতে পারে। ব্যাকটেরিয়া দ্বারা উৎপাদিত অন্যান্য অনেক উপাদান থেকে আসল অ্যান্টিবায়োটিক আলাদা করা একটি কঠিন কাজ ছিল । তবে আমাদের দলের সদস্য অধ্যাপক আফতাব উদ্দিন সেই অংশটি নিপুণভাবে সম্পন্ন করেছেন।”

তিনি আরও বলেন,”গবেষণায় আমরা দেখতে পাই ব্যাকটেরিয়াটি পাঁচটি পৃথক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি করছে, যা বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে আমরা এখন পর্যন্ত শুধুমাত্র দু’প্রকারের অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে গবেষণা করছি। ভবিষ্যতে অন্য তিন প্রকারের অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে গবেষণা করব।”

বিশেষজ্ঞদের মতে,অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যাপক ব্যবহার অনেক মারাত্মক সংক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তাই পরবর্তীতে চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে পারে এমন নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বার্তা কক্ষ , ৩১ মে ২০২১

Share