চাঁদপুর

চাঁদপুরে পাটের বাম্পার ফলন : বেড়েছে ব্যাগ-বস্তার ব্যবহার

চাঁদপুর দেশের অন্যতম পাট উৎপাদনকারী নদীবিধৌত অঞ্চল। অনাধিকাল থেকেই চাঁদপুরের মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের উপযোগী। এ অঞ্চলের অধিবাসীদের পাট চাষের প্রতি বেশ আগ্রহ রয়েছে।

চাঁদপুরের প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই কমবেশি পাট উৎপন্ন হয়ে থাকে। যার ফলে ৩ টি পাটকল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যেগুলি এখনও পাটজাত পণ্য উৎপাদন করে যাচ্ছে। পাটের ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে চাঁদপুরের বেশ সুনাম রয়েছে।

বর্তমানে দু’শতাধিক ছোটবড় সরকারি অনুমোদিত পাট ব্যবসায়ী রয়েছে।

চলতি বছরে চাঁদপুরে পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকার পাটের তৈরি ব্যাগে পণ্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় চাষিরা পাটের সঠিক মূল্য পাচ্ছে বলে পাট চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে । এবারের পাটের বাজার মূল্যে চাষিরা অনেকটাই খুশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি চাঁদপুরের দেয়া তথ্যমতে, চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় এবার ৪ হাজার ৩ শ’৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ হয়েছে এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৭ হাজার ৬৮ বেল । হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৮ দশমিক ৬১ বেল। (১ বেল = ৫ মণ)

এর মধ্যে দেশি জাতের পাটের চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩ শ’৮০ হেক্টর এবং উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৩ শ’৩২ বেল ।

তোষা জাতের পাটের চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৩ শ’৭১ হেক্টর এবং উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ১ শ’৩১ বেল । মেস্তা জাতের পাটের চাষাবাদ হয়েছে ৯২ হেক্টর এবং উৎপাদন হয়েছে ৮শ’ ৭৫ বেল । কেনাফ জাতের পাটের চাষাবাদ হয়েছে ২ হাজার ৩ শ’৮০ হেক্টর এবং উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৩ শ’৩২ বেল ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি চাঁদপুরের এক কর্মকর্তার মতে, ‘‘এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে । বর্তমানে পাট পঁচাতে চাষিদের সমস্যা হচ্ছে। কেননা এখন আগের মত পাট পঁচাতে ডোবা, নালা, হাজা মাজা পুকুর নেই। আধুনিক পদ্ধতিতে পাট ছড়ানোর বিষয়টি ব্যয়বহুল বিধায় চাষিরা এটা করছেন না।”

সফরমালীর একজন পাট চাষি বলেন, এবারের পাটের মূল্যে পাট চাষিরা খুশি। পাটের চাহিদাও বেড়েছে। তবে পাট পঁচাতে সমস্যা হচ্ছে। কাজের লোকের মূল্য বেশি।

প্রসঙ্গত, পলিথিনের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে যাওয়ায় এর বাজারও পড়ে যায়। যার ফলে পাট শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় অনেক মিল বন্ধ হয়ে যায়। অনেক দেরিতে হলেও সরকার ১৯৯৪ সালে পলিব্যাগ উৎপাদন, আমদানি ও বাজারজাত নিষিদ্ধ করা সত্ত্বেও তা’ আর তেমন কার্যকর হয় নি। পরে ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে আইন পাশ করে পলিথিনের ব্যবহার, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়।

বর্তমানে সরকার পাটের অতীত গৌরব ও ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ও পাট শিল্পকে রক্ষা করতে প্রথম পর্যায়ে ৬ টি এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৩ টি পণ্য পাটের বস্তা বা ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছেন।

এ সিদ্ধান্তটি দেশ ও জাতির জন্যে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে পাট বিভাগীয় কর্মকর্তাগণ, পাট ব্যবসায়ী , পাটকল মালিক ও পাটচাষিগণ আশা করছেন।

About The Author

প্রতিবেদক- আবদুল গনি

: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭:১০ পিএম, ২৩ আগস্ট ২০১৬, মঙ্গলবার
ডিএইচ

Share