চাঁদপুর

‘পাখি’ নয় এবারের ঈদে ‘কিরণমালা’স্রোতে ভাসছে নারী-শিশুরা

আশিক বিন রহিম, চাঁদপুর :

‘ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি।’ তাই খুশির দিনে নতুন পোশাক না হলে কি চলে? নতুন একটি পোশাকের খোঁজে দু’ঘণ্টা চাঁদপুর শহরের বেশক’টি বিপণিবিতানে দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা থেকে আগত জনৈক এক প্রবাসীর স্ত্রী। আগে থেকে নির্ধারণ করা পোশাকটি পেতে কী আকূলতা। এবারের ঈদে তিনি নেবেন ‘ফ্লোরটার্চ’ আর মেয়ের জন্য ‘কিরণমালা’। দীর্ঘসময় ধরে বিভিন্ন বিপণিবিতানে ঘুরেও কাঙ্খিত সেই পোষাক ‘কিরণ মালা’ ও ‘ফ্লোরটার্চ’ খুঁেজ পাচ্ছেন না।

অবশেষে শহরের একটি বিপণিবিতানে দেখা মিললো কাঙ্খিত সেই পোশাকের। দাম অনেক চওড়া কিন্তু তাতে কি? ভারতীয় পোশাক বলে কথা, দাম একটু বেশিই হবে এটাইতো স্বাভাবিক!

এমনিভাবে বরাবরের মতো এবারো বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় চাঁদপুরের নারীরাও ভারতীয় পোশাকের আর্কষনে মাতাল হয়ে উঠেছেন। এবারের ঈদ বাজারেও ভারতীয় পোশাকের একক দাপট লক্ষ্য করা গেছে।

অবশ্য এ বছর ‘পাখি’ নয় নারীরা মেতে উঠেছেন কিরণমালা ও ফ্লোরটার্চ-এ। এছাড়াও অন্যান্য ভারতীয় পোশাকের মধ্যে কটকটি, জলপরী, ইচ্ছে নদী, পারি, ঝিলিক, রাজকন্যা, জলনুপুর, লাবণ্য, ঝিলমিল, পাটিয়ালী, শঙ্খমালা, নন্দিনী, আঁখি উল্লেখযোগ্য।

প্রতি বছরের মতো এবারও ভারতীয় এসব পোশাকের মোহে চাঁদপুরের নারী এবং মেয়ে শিশুরাও নিজেদের আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে রাখছেন। ফলে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী যে কোনো পোশাককে মুহূর্তেই ভারতীয় বাংলা চ্যানেলের নায়িকাদের নামানুসারে চালিয়ে দিচ্ছেন অকপটে।

এতে করে কোনটি ‘জলনুপুর’ আর কোনটি ‘কিরণমালা’ তা চিনতে খেই হারিয়ে ফেলছে গ্রাম থেকে আসা সাধারণ ক্রেতারা।

এদিকে ১৫ রমজানের পর থেকে জমে উঠা চাঁদপুরের ঈদ বাজারে এখন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়। মানুষের এই ভীড় ঠেলে প্রিয় পোশাকটি ক্রয় করতে ব্যস্ত এখন সকল বয়সের নারী ও পুরুষরা।

চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতানে পোশাকের দোকানগুলোতে ইতোমধ্যেই রঙ-বেরঙের বাহারি ডিজাইনের পোশাকে ছেঁয়ে গেছে।

গত বছর ঈদের বাজারে ভারতীয় একটি টিভি সিরিয়ালের নায়িকার নামানুসারে ‘পাখি’ থ্রি-পিচ ছিলো বেশ আকর্ষণীয়। এ বছরও অনুরূপ ‘কিরণমালা’ এবং ‘ফ্লোর র্টাচ’ থ্রি-পিচ এবং ছোট মেয়েদের পোশাক বাজারে এসেছে। ভারতীয় টিভি সিরিয়াল দেখার ফলেই তরুণীদের পাশাপাশি শিশুরাও ওই সব পোশাকের মগ্নœ হয়ে পড়ছে।

মঙ্গলবার শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি ‘কিরণমালা’ ও ‘ফ্লোর র্টাচ’ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। এছাড়া কটকটি, জলপরী, ইচ্ছে নদী, পরী, ঝিলিক, রাজকন্যা, জলনুপুর, লাবণ্য, ঝিলমিল, পাটিয়ালী, শঙ্খমালা, নন্দিনী, আঁখিসহ অন্যান্য ভারতীয় থ্রি-পিচ এবং শাড়ি বিক্রি হচ্ছে হচ্ছে ৫ হাজার থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। কোনো কোনো দোকানে আরো বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এসব ভারতীয় পোশাক।

এ দিকে বিভিন্ন পোশাকের এই আকাশছোঁয়া দাম শুনে অনেকটা ঘুরপাক খাচ্ছেন মধ্য আয়ের ক্রেতারা। অল্প আয়ের এসব মানুষগুলো মার্কেটে এসে পোশাক কিনতে অনেকটাই হিমশিম খাচ্ছেন। ভারতীয় এসব পোশাকের দাম অনেক বেশী হওয়ায় অনেক ক্রেতাই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অন্য দিকে দোকানিরা বলছেন এবারে পোশাকের দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালেই রয়েছে।

চাঁদপুর টাইমস/প্রতিনিধি/এএস/এমআরআর/২০১৫।

আপডেট :   বাংলাদেশ সময় : ০৮:৪২ অপরাহ্ন, ২২ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, মঙ্গলবার ০৭ জুলাই ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ

 চাঁদপুর টাইমস ডট কমপ্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি

Share