২৭ বছরেও এইডস আক্রান্ত অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। দেশে ক্রমাগতভাবে বাড়তে থাকা আক্রান্তদের সাথে যোগ হয়েছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে থাকা বিপুল সংখ্যক এইচআইভি পজিটিভ জনগোষ্ঠী। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, দ্রুত দেশে এবং রোহিঙ্গাদের মধ্যে থাকা এইডস আক্রান্তদের শনাক্ত করা না গেলে ভয়াবহ ঝুকিতেঁ পড়বে বাংলাদেশ।
কাজের সন্ধানে মালদ্বীপ গিয়ে এইচআইভ পজেটিভ নিয়ে দেশে ফিলেছিলেন তারিকের বাবা। দীর্ঘ পাঁচ বছর অসুস্থ থেকে ২০০৮ সালে মারা গেলেও এইডসের জীবাণু রেখে যান স্ত্রীর শরীরে। সেই থেকে জীবন বাঁচাতে হাসপাতালের বিছানায় লড়ে যাচ্ছেন তারিকের মা।
তারিক তার পরিবারের গল্প জানাতে গিয়ে বলে, ‘আব্বু মারা যাওয়ার পর আমরা জানতে পেরেছি যে আম্মুও পজেটিভ। এখন হসপিটালে চিকিৎসা চলছে। তারা ওষুধ দিচ্ছে, বলছে যে সে ভালো হবে।’
আরেকজন এইডস আক্রান্তর স্বজন বলেন, ‘আক্রান্ত হওয়ার পর সে ওষুধ খায় নাই। এখন বেশি অসুস্থ হয়ে গেছে বলে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।’
এইডসে আক্রান্ত এক রোগী এ ব্যাপারে বলেন, ‘আমি এইডআইভিনতে আক্রান্ত। কিন্তু আশার কথা, বাংলাদেশ সরকারের সহযোগীতায় আমি এখন ভালোই সুস্থ।’
গেল বছর ৬০০ হলেও চলতি বছরে এইচআইভি পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে ৭০০’র কাছাকাছি। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের তথ্যমতে, রাজধানীতে শিরায় মাদকসেবীদের মধ্যে এইচআইভি’র সংক্রমণ বেড়েছে বিপজ্জনকভাবে।
গত পাঁচ বছরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংখ্যা ৫.৩ শতাংশ থেকে বেড়েছে ২২ শতাংশে।
এইচআইভি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, ‘কনডম প্রমোশন বা ওঅন্য যে ইন্টারভেনশনগুলি রয়েছে, যেমন আইভি ড্রাগ ইউজারদের নিডল এক্সচেঞ্জ প্রোগাম- এগুলোতে আরও এমফেসিস দেওয়া দরকার।’
এরমধ্যে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে পাঁচ হাজারেরও বেশি এইচআইভি পজেটিভ আছে, বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী আরও বলেন, ‘যাদের ওষুধ প্রয়োজন, তাদেরকে ইমিডিয়েটলি সেটা দিতে হবে। এখানে যে মাগুলি আছে, তাদেরকে অবশ্যই আমাদের ইন্টারভেন করতে হবে। তাদের বাচ্চাগুলি যাতে পজেটিভ না হয়।’
আন্তর্জাতিক হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে এইচআইভি পজেটিভ মানুষের সংখ্যা দশ থেকে চৌদ্দ হাজার। ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৪০২১ জনকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তবে সনাক্তের হার বাড়িয়ে সমস্যার সমাধানে জন সচেতনতার পাশাপাশি সরকারি কার্যক্রমকে আরও বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
সংক্রামক ব্যধি হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট সৈয়দ আহসান তৌফিক এ ব্যাপারে বলেন, ‘অক্টোবর মাস থেকে সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে তাদের ডায়ানোসিস করা, চিকিৎসা করা এবং পর্যাক্রমে এটি সারা বাংলাদেশে বিস্তৃত হয়ে যাবে। তখন আমরা সকল রোগীর পূর্ণাঙ্গ ডাটা সংগ্রহ করে চিকিৎসা দিতে পারবো।’
এইডসের উচ্চ ঝুঁকি প্রবণ এলাকায় নতুনভাবে এসেছে কুমিল্লা ও নোয়াখালীর নাম। পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় বাড়িয়ে সরকারকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে এইডস নির্মূলের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
নিউজ ডেস্ক:
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৩:৪০ পি.এম, ১ ডিসেম্বর ২০১৭,শুক্রবার
এএস