সারাদেশ

সবার চোখে ধুলা দিয়ে রাতারাতি কোটিপতি জামাই-শ্বশুর

পাম অয়েল ও বাটার অয়েল মিশিয়ে চুলায় জ্বাল দিয়ে ভেজাল ঘি তৈরি করতেন জামাই-শ্বশুর। এসব ভেজাল ঘি মিষ্টির দোকান থেকে শুরু করে বিভিন্ন দোকানে পাইকারি দরে বিক্রি করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যান জামাই-শ্বশুর।

দীর্ঘদিন গোপনে এমন অপকর্ম করে এলেও অবশেষে সন্ধান মিলেছে সেই ভেজাল ঘি কারখানার। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পৌর শহরের সরদারপাড়া মহল্লায় এ ভেজাল ঘি তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়ে সোমবার রাতে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান।

এ সময় কারখানা থেকে ৪০ মণ ভেজাল ঘি, ৫ ব্যারেল পাম অয়েল, ৩৭ কার্টন বাটার অয়েল, ৪ বস্তা ঘির ফ্লেবার ও ঘি তৈরির সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে ভেজাল ঘি তৈরির মূলহোতা কারখানার মালিক পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের সুলতান শাহের ছেলে শহিদুল ইসলাম পালিয়ে যান

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ভেজাল ঘি তৈরির সময় ওই কারখানা থেকে ছয়জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। এরপর রাতেই জব্দকৃত মালামাল জনসম্মুখে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।

আটককৃতরা হলেন- ফরিদপুর উপজেলার গোপালনগর গ্রামের বাসিন্দা মিলন, বিষ্ট, কামরুল ইসলাম, জীবন ঘোষ, শহিদুল ইসলাম ও ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের সরদারপাড়া মহল্লার রজব আলী।

পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯-এর ৪৩ ধারায় প্রত্যেককে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি শহিদুল ইসলাম ও তার শ্বশুর শামসুল আলমের বিরুদ্ধে পুলিশকে মামলা করার নির্দেশ দেন। ভেজাল ঘি প্রস্তুতকারক শহিদুল ইসলাম তার শ্বশুর শামসুল আলমের সরদারপাড়া মহল্লায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল ঘি তৈরি করে আসছিলেন। কারখানার প্রধান ফটক সারা দিন বন্ধ রাখা হতো।

অপরিচিত লোকদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হতো না। পরে তৈরিকৃত ভেজাল ঘি পাইকারি দরে পাবনাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হতো। সবার চোখে ধুলা দিয়ে এভাবে রাতারাতি জামাই-শ্বশুর হয়ে যান কোটিপতি। অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে কারখানা বন্ধ করে হয়েছে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুর রহমান।

বার্তা কক্ষ

Share