পলিথিন উৎপাদন বন্ধে অভিযান

পরিবেশের শত্রু পলিথিন ব্যাগের অবাধ ব্যবহার বন্ধে সরকারের উদ্যোগটি কার্যকর অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। মূলত : চাঁদপুরসহ সারাদেশের হাট বাজারের দোকানে, মাছ বাজারে, তরি-তরকারির দোকানসহ ছোট-বড়-মাঝারী,স্কুল,কলেজ . মাদ্রাসার আম-পাশের দোকানে গুলোতে পলিথিন ব্যাগে এখন সায়লব। এর ব্যবহার এতাটাই যে বৃদ্ধি পেতে শুরু করছে- প্রতিটি আইটেমের সওদায়ের জন্যে দোকানী পলিথিন দিয়ে ক্রয়কৃত জিনিসপত্র পলিথিনে ভরে দিতে কোনো প্রকার কার্পণ্যবোধ করছেন না। মোটকথা-বাজারের স্থায়ী দোকান থেকে খোলা বাজারের খুচরা যে কোনো দ্রব্য কেনা মাত্র পলিব্যাগে ঢুকিয়ে ক্রেতাকে স্ব-হাস্য বদনে দিচ্ছে।

গ্রাম্য ছোট ছোট হাট বাজারের মুদি দোকানগুলোতে এ পলিথিনের ব্যবহার ও কেজি দরে অন্য দোকানীদের কাছে বিক্রি করার দৃশ্য ব্যাপক হারে দেখা যাচ্ছে। একশ্রেণির মোটর সাইকেল আরোহী এস আর বা বিক্রয় প্রতিনিধি গুদাম থেকে ১০০, ২০০, ২৫০ ও ৫০০শ’ গ্রামের প্যাকেট নিয়ে প্রতিটি দোকানে দোকানে সরবরাহ করে থাকে। যারা এস আর এ সব সরবরাহ করে তারা মাসিক বেতন করা বা কমিশনভিত্তিক ঐ সব মোটর সাইকেল আরোহী এস আর গণ দৈনিক আয় হিসেবে পেয়ে থাকেন।

অপর দিকে সব ধরণের দোকানীগণ দোকানে বসেই ঔ সব পলিথিন ব্যাগের প্যাকেট পেয়ে যান। আগে ছিলো এ সব পলিথিন ব্যাগ নানা রং বেরং এর। এখন শুধুই সাদা ধব ধবে। এ প্রবণতা, একইবারেই বন্ধ ছিলো। এখন পুনরায় চালূু হয়েছে। এটা বন্ধ না করা গেলে পরিবেশে আবারও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। প্রয়োজনীয় আইন আছে। কিন্তু কতটুকু প্রয়োগ হচ্ছে তা বুঝা যাচ্ছে না।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেছেন,‘ ১ নভেম্বর থেকে পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর, ভোক্তা অধিদপ্তর, খাদ্য অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট মিলে টিম গঠন করা হবে। জনগণের সহযোগিতায় সরকার পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন ও ব্যবহার বন্ধ করবে। পলিথিন শপিং ব্যাগ পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পরিবেশবান্ধব ব্যাগ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ’

শনিবার ৫ অক্টোবর নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন শপিং ব্যাগ বন্ধকরণে ঢাকার শান্তিনগর বাজার কমিটি ও ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যদের সঙ্গে সমিতির অফিস কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। পরিবেশ সচিব বলেন,‘ ২২ বছর ধরে আইন অমান্য করে পলিথিন ব্যবহার চলছে, যা সঠিক নয়। পলিথিনের কারণে ক্যান্সার ও লিভারসহ অন্যান্য অসুখের ঝুঁকি বাড়ছে। জনস্বাস্থ্য এবং জনস্বার্থ রক্ষায় পলিথিন নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত সবাইকে প্রতিপালন করতে হবে। ’

পলিথিনের ব্যবহার দেশের পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে হলে সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মানতে হবে। বিক্রেতা ও ক্রেতাদের উভয়কে নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান তিনি।

পলিথিন ব্যাগ ও প্ল্যাস্টিক দ্রব্য ব্যবহার দেশের পরিবেশের ওপর মারাত্নক প্রভার ফেলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে-পলিথিন পরিবেশগত ভারসাম্যকে দারুণভাবে ব্যাহত করে চলছে। তাই পলিথিন মুক্ত দেশ গড়তে জাতি,ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলকেই এগিয়ে আসা উচিৎ।

১৬ অক্টোবর ২০২৪
এজি

Share