মঙ্গলবার ২৬ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন সচিবালয় এ নীতিমালা জারি করে। বিদেশি পর্যবেক্ষক বা গণমাধ্যমকর্মীদের যোগ্যতা, করণীয়, ভিসা প্রক্রিয়া এসব বিষয় সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে নীতিমালায় বলা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী,কেবলমাত্র অভিজ্ঞরাই নির্বাচন পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবেন। পর্যবেক্ষক সংস্থার নির্বাচনি কাজ, সুশাসন,গণতন্ত্র, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
সংশ্লিষ্ট দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে এবং তার প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে। পর্যবেক্ষকদের বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন মেনে চলতে হবে। নির্বাচনী অপরাধ কিংবা জাল-জালিয়াতি বা অসততাজনিত কোনো অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি পর্যবেক্ষক হওয়ার অযোগ্য হবেন।
পর্যবেক্ষকদের অভিজ্ঞতার সনদসহ সিভি, মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্টের কপি, ইসি নির্ধারিত ঘোষণাপত্র সইসহ জমা দিতে হবে। কভার লেটারসহ আবেদনপত্র,যেখানে নামের তালিকা থাকতে হবে। দোভাষী নিলে তার জন্য সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দেয়ার ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।
আবেদনপত্র বাছাইয়ের পর ইসি তা অনাপত্তিপত্রের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠাবে। যার অনুলিপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের মতামত বা অনাপত্তির বিষয় সাত দিনের মধ্যে সরাসরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইসিতে পাঠাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তি মিললে নির্বাচন কমিশন বিদেশী পর্যবেক্ষক হিসেবে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক কার্ড দেবে।
নীতিমালায় পর্যবেক্ষকদের দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ভোটের দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে ই-মেইল বা ডাকযোগে নির্বাচনি প্রতিবেদন পাঠাবে। এক্ষেত্রে প্রতিবেদনে ভোটের আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরের পরিস্থিতির প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।
পর্যবেক্ষণ হতে হবে পক্ষপাতহীন, ফলপ্রসূ ও সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন। ভোটগণনা ও ফলাফল একত্রীকরণের সময় থাকার জন্য প্রতিটি সংস্থা থেকে একজন মনোনয়ন দেয়া যাবে।
বিদেশী গণমাধ্যমকেও পর্যবেক্ষকদের সব নিয়ম মেনে চলতে হবে। বিদেশী গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ইংরেজি ‘জে’ ক্যাটাগরির ভিসা দেয়া হবে। আর পর্যবেক্ষকরা পাবেন ‘টি’ ক্যাটাগরির ভিসা।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিদেশি পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করলে,পক্ষপাতমূলক আচরণ করলে, পর্যবেক্ষক বা বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীর কার্ড বাতিল করা যাবে। এ ছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তাও সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক বা গণমাধ্যমকর্মীকে ভোটকেন্দ্র বা পুরো আসন থেকে বহিষ্কার করতে পারবে।
পর্যবেক্ষকরা অস্থায়ীভাবে শুল্ক অব্যাহতি সুবিধা নিয়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং উপকরণ আমদানি বা আনতে পারবেন। এজন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। শুল্ক অব্যাহতির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। নির্বাচনের পর তারা তাদের যন্ত্রপাতি বা উপকরণ নিয়ে যেতে পারবেন।
বিদেশী গণমাধ্যমকে প্রয়োজনীয় তথ্য দেয়ার জন্য এবং সম্প্রচার করার জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন একটি মিডিয়া সেন্টার স্থাপন করবে। পর্যবেক্ষকদের সহায়তার জন্য এয়ারপোর্টে হেল্প ডেস্ক থাকবে। মিডিয়া সেন্টারের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন থেকে তাদের পর্যবেক্ষক কার্ড, গাড়ির স্টিকার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেয়া হবে।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, নির্বাচনি আচরণবিধি, নির্বাচনি বিশেষ কর্মকর্তা আইন,স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা, সংসদীয় আসনের সীমানা পুননির্ধারণ আইন মেনে চলতে হবে। সূত্র : বাসস
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
এজি