‘যত বেশি পর্যটক আসবে, দুনিয়ার মানুষ তত বেশি বাংলাদেশকে জানতে পারবে’

থিয়েটারসহ বিভিন্ন ধরনের পারফরমিং আর্টসের সঙ্গে পর্যটনের সমন্বয় দেখতে চান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, এই সমন্বয়টা করা হলে পর্যটন খাতের বিকাশের ক্ষেত্রে তা অবদান রাখবে।

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) কক্সবাজারে ‘পর্যটন শিল্পের সঙ্গে শিক্ষা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের যোগসূত্র বৃদ্ধি’ বিষয়ক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার সমাপনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

আর্মি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট রেস্ট হাউজ ‘জল তরঙ্গ’ হোটেলের সম্মেলন কক্ষে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। ‘এনহ্যান্সিং অ্যাকাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি লিংকেজ ইন ট্যুরিজম অ্যান্ড বুক লন্সিং’ শীর্ষক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান।

‘দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, দেশে দেখার এবং দেখানোর অনেক কিছু আছে’ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কতটা গুছিয়ে সবার কাছে আকর্ষণীয় করে দেশকে দেখাতে পারবো সেই জন্যই ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্টে আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা দরকার। আমাদের অনেক ঐতিহাসিক জায়গা আছে, অনেক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আছে। সেগুলোকে আরও গুছিয়ে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন খুবই জরুরি। আমরা কেমন করে উপস্থাপন করছি সেটি গুরুত্বপূর্ণ।’

ট্যুরিজম যত বেশি উন্নত হবে, অর্থনীতিতে এর ইতিবাচক প্রভাব তত বেশি পড়বে উল্লেখ করে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘যত বেশি পর্যটক আসবে, দুনিয়ার মানুষ তত বেশি বাংলাদেশকে জানতে পারবে। আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান বাড়বে।’

ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্টের ওপরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নতুন টেক্সট বই রচনা করেছে। এই উদ্যোগ পর্যটন খাতকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একধাপ এগিয়ে নেবে বলে মনে করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এই কর্মশালার মাধ্যমে দেশব্যাপী পর্যটন শিল্পের সচেতনতা ও পর্যটন শিক্ষা বিকাশে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এর অনেক বড় প্রভাব আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় পড়বে। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা, যোগ্যতা বাড়ানোর উপরে এর প্রভাব পড়বে।’

আমাদের বহু পেশার ক্ষেত্রে, বৃত্তির ক্ষেত্রে মানসিক দীনতা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই মানসিক দীনতা কাটিয়ে উঠতে হবে। এরফলে এই সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে। সেটি করতে পারলেই দেশে এবং দেশের বাইরে আমাদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারবো। এই জন্য শিক্ষাটা ভালোভাবে গ্রহণ করতে হবে। পারফরমিং আর্টস এবং থিয়েটারের সঙ্গে পর্যটনের সমন্বয় হলে এই সেক্টর বিকাশের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।’

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘পড়াশোনা শুধু ডিগ্রি আর সার্টিফিকেটের জন্য নয়, এটি হতে হবে একজন মানুষকে তৈরি করে দেওয়ার জন্য। যাতে সে দক্ষ ও যোগ্য মানুষ হিসেবে তৈরি হয়ে নিজের জীবনে এবং দেশের জন্য অবদান রাখতে পারে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক সেরকম মানুষ তৈরির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

ওয়ার্কশপে ‘ব্রান্ডিং অ্যান্ড প্রোমোশন অব ট্যুরিজম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান।

কর্মশালার সমাপনী দিনে বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ পাঁচ জন পর্যটনের বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞ। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর মোহাম্মদ বিন কাশেম, স্নাতকপূর্ব শিক্ষা বিষয়ক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মনিরুজ্জামান, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন, প্রকাশনা ও বিপণন দফতরের পরিচালক আবদুল মালেক সরকারসহ বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা।

বার্তা কক্ষ, ২৮ অক্টোবর ২০২২

Share