বিশেষ সংবাদ

একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় মা-ছেলের অংশগ্রহণ (ভিডিও)

পড়ালেখার ক্ষেত্রে বয়স কোনো বাধা নয়- এমনটাই প্রমাণ করলেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার মলি রানী ও ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মাসুদ করিম চুটন।

মলি রানী ৩৫ বছর বয়সে ছেলের সঙ্গে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। অন্যদিকে ৩৮ বছর বয়সে চুটনও তার ছেলের সঙ্গে দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন।

বাগাতিপাড়া : মলি রানী বাগাতিপাড়া উপজেলার গালিমপুরের দেবব্রত কুমার মিন্টুর স্ত্রী। রোববার ( ৫ ফেব্রুয়ারি) বাগাতিপাড়া ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে মা মলি ও ছেলে মৃণয় কুমার কুণ্ডু ইংরেজি বিষয়ে পরীক্ষা দেন।

মলি রানী জানান, তার বাবার বাড়ি নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার প্রসাদপুরে। তিনি নবম শ্রেণীতে পড়ার সময় বাবা অসিত কুণ্ডু তাকে বিয়ে দিয়ে দেন। এরপর আর পড়ালেখা করার সুযোগ হয়নি। সংসারের চাপে পিষ্ট হয়ে গৃহিণীই রয়ে যান। এরই মধ্যে দুটি সন্তানের জন্ম দেন মলি রানী। বড় ছেলে মৃণয় কুমার কুণ্ডু বাগাতিপাড়া মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে কারিগরি শাখায় বিল্ডিং মেইনটেনেন্স ট্রেডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ছোট ছেলে পাপন কুণ্ডু তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ে।

তিনি জানান, ছেলেদের পড়ালেখা করাতে গিয়ে তিনি অনুভব করেন তার নিজের পড়ালেখা জানা দরকার। সেই ভাবনা থেকেই বাগাতিপাড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে কারিগরি শাখায় ড্রেস মেকিং অ্যান্ড টেইলারিং ট্রেডে ভর্তি হন। চলতি বছর মা ও ছেলে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। সারা দিন সংসারের কাজ সেরে রাত জেগে পড়ালেখা করেন তিনি।

মলি রানী জানান, তার স্বামী মিষ্টি দোকানদার। তিনি তার পড়ালেখায় বেশ সহযোগিতা করেছেন।

ঈশ্বরগঞ্জ : ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার দত্তপাড়ার মাসুদ করিম চুটন (৩৮)। পারিবারিক নানা প্রতিকূলতার কারণে শৈশবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি। অবশেষে সাংসারিক জীবনে এসে তিনি ছেলের সঙ্গেই পড়াশোনা শুরু করেন।

জানা যায়, চুটন ফানুর আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার ছাত্র। তিনি পিতাম্বরপাড়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষা দিচ্ছেন। অন্যদিকে তার ছেলে ইফতেকার জাহান রাফি ঈশ্বরগঞ্জ ডিএস কামিল মাদ্রাসা থেকে একই বিভাগে ঈশ্বরগঞ্জ বালিকা ও মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে।

রোববার সরেজমিন পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, বাবা ও ছেলে উভয়েই পরীক্ষা দিচ্ছে। এদিন ছিল ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা। ছেলের সঙ্গে বাবার পরীক্ষা দেয়ার বিষয়টি ঈশ্বরগঞ্জে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি করে।

পরীক্ষা শেষে চুটন বলেন, শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকায় কর্মজীবনে খুব অসহায়ত্ব বোধ করি। তাই প্রতিজ্ঞা করলাম, বয়স যা-ই হোক না কেন, সার্টিফিকেট আমাকে অর্জন করতেই হবে। বাবা-ছেলে একসঙ্গে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।(যুগান্তর)

ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন…

নিউজ ডেস্ক
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ০৯ : ৫৩ পিএম, ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ সোমবার
এইউ

Share