‘পরকীয়ার জেরে’ খুন হলো যুবক : প্রবাসীর স্ত্রীসহ আটক ৩

পরকীয়ার জেরে খুন হলেন সিলেটের কানাইঘাটের এক যুবক। নিহত যুবক ইমরান হোসেন (২৪) একজন ব্যবসায়ী। পুলিশের বলছে, পরকীয়ার জেরেই তিনি খুন হয়েছেন।

এ ঘটনায় ইমরানের কথিত প্রেমিকা এক প্রবাসীর স্ত্রী সুহাদা বেগম ও তার দেবরসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্মম এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সিলেটে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

নিহত ইমরান কানাইঘাট উপজেলার বীরদল সোনাপুর গ্রামের আবু বক্করের ছেলে।

আবু বক্কর সিলেটের গোয়াইনঘাট ডাক অফিসে পোস্ট মাস্টার হিসেবে কর্মরত। নিখোঁজের ৬ দিন পর গত শনিবার রাত ১০টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার বড়চতুল ইউনিয়নের নয়াগ্রামে একটি বাড়ির পুকুর থেকে ইমরানের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কানাইঘাট পৌর শহরের চয়েস টেইলার্সের মালিক ইমরান হোসেনকে ১৮ সেপ্টেম্বর কানাইঘাটের দক্ষিণ নয়াগ্রামের প্রবাসী বদরুল ইসলামের স্ত্রী সুহাদা বেগম খবর দিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এরপর থেকে ইমরান হোসেন নিখোঁজ ছিলেন। তার কোনো সন্ধান না পেয়ে বাবা আবু বক্কর কানাইঘাট থানায় নিখোঁজের দুই দিন পর একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

এরপর শুক্রবার ইমরান হোসেনকে অপহরণ করে খুন ও গুমের অভিযোগ এনে সুহাদা বেগম (২১) ও সুহাদার ভাই ইমরান আহমদ (২৪), দেবর মাসুম আহমদ (৩০) ও দক্ষিণ লক্ষীপ্রসাদ গ্রামের উমর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের (২৩) নাম উল্লেখ করে আরো ৭/৮ জনকে আসামি করে কানাইঘাট থানায় আরেকটি মামলা করেন।

মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কানাইঘাট থানা পুলিশ ইমরান হোসেন নিখোঁজের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সুহাদা বেগমের দেবর মাসুম আহমদ ও নিকটাত্মীয় জাহাঙ্গীর আহমদকে আটক করে।

তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির সূত্র ধরে এ হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী ইমরান হোসেনের ‘প্রেমিকা’ সুহাদা বেগমকে শনিবার গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ইমরান হোসেনের লোমহর্ষক হত্যাকান্ডের বর্ণনা দেয়। আটকের পর সুহাদা পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করে ৬ দিন আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে ইমরান হোসেনকে বসত ঘরে হত্যা করা হয়।

তার তথ্যের ভিত্তিতে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জুনেদসহ একদল পুলিশ ইমরান হোসেনের বস্তাবন্দী অর্ধগলিত লাশ প্রবাসীর বাড়ির পুকুর থেকে শনিবার রাত ৯টার দিকে উদ্ধার করেন। পরে লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকারী পুলিশ জানায়, ইমরান হোসেনকে পৈশাচিক কায়দায় প্রথমে গলা কেটে, লিঙ্গ কর্তন করে হত্যা করে লাশ চটের বস্তায় ভরা হয়। তারপর বস্তার নিচের অংশ বাঁশ ও গাছের সাথে বেঁধে পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়।

সিলেটের কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, নিহত ইমরান হোসেনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীর স্ত্রী সুহাদা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। এ সম্পর্কের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তাছাড়া এ হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত থাকায় সুহাদা বেগম ও তার দেবর মাসুম আহমদ, জাহাঙ্গীর আহমদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময়  ৩:০০ এএম,  ২৬  সেপ্টেম্বর  ২০১৬, রোববার

ডিএইচ

Share